বিজ্ঞানের জনক বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)
কামরুল হাসান
অন্ধকারাচ্ছন্ন অসভ্য সমাজটাকে সুন্দর সুনিপুণ সমাজে পরিণত করে, পথহারা মানুষকে সঠিক পথ দেখিয়ে, আঁধারের গায়ে আলোর মশাল জ্বালিয়ে, বঞ্চিত মানুষের অধিকার ফিরিয়ে দিয়ে, বিজ্ঞানময় সুস্থ একটি সমাজ উপহার দিলেন কে? কে এই মহামানব? হ্যাঁ তিনি আর কেউ নন! তিনি সেই মহামানব, যিনি বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের মালিকের ভালবাসার ধন, বিশ্বাসীদের প্রাণের স্পন্দন, যার সাথে কোন তুলনাই হয় না, যাকে আকাশ-বাতাস, চন্দ্র-তারা, পাহাড়-পর্বত, নদ-নদী, বন-বনানী, গাছ-পালা, তরু-লতা সহ আটারো হাজার মাখলুকাতের জন্য রহমতস্বরূপ সৃষ্টি করা হয়েছে।
তিনি সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ রাসূল, বিজ্ঞানের জনক, হযরত মুহাম্মদুর রাসুলুল্লাহ (সা.), যাঁকে ভালবাসলে বা সন্তুষ্ট করলে আল্লাহকে ভালবাসা বা সন্তুষ্ট করা হয়। যাকে অসন্তুষ্ট বা কষ্ট দিলে আল্লাহকে কষ্ট দেয়া হয়। যার সুপারিশ ছাড়া কোন উম্মতই জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না, তাই তাঁর ভালবাসা, সন্তুষ্টি আমাদের প্রত্যেকের জীবনে একমাত্র সাধনা হওয়া উচিত।
আরবের মরুপ্রান্তরে, কোরাইশ বংশে মা আমিনার কোল আলোকিত করে এ বিশ্বে ৫৭০ সলের ২০ এপ্রিল তিনি আবির্ভূত হয়েছিলেন। তিনি ছিলেন সব জ্ঞানের উৎস অর্থাৎ ‘উম্মি নবী’, ‘উম’ দাতু থেকে নির্গত হলে অর্থ দাঁড়ায় মূল অর্থাৎ তিনি হলেন জ্ঞান বিজ্ঞানের মূল।
প্রায় দেড় হাজার বছর পূর্বে প্রগাঢ় অন্ধকারে নিমজ্জিত মানব জাতিকে অধঃপতনের অতল গহ্বর থেকে উদ্ধার করে আলোর পথে, বিজ্ঞানের পথে পরিচালিত করার লক্ষ্যে মহান আল্লাহ তাঁর প্রিয়তম নবীর ওপর অবতীর্ণ করেন ইসলামের প্রধান উৎস আল-কুরআন। যাকে তিনি কুরআনুল হাক্বীম বিজ্ঞানময় বলে ঘোষণা করেন (ইয়াসীন: ২)। সে সময় থেকেই কুরআনের বাণীবাহক নবী (সা.) বিশ্বকে বিজ্ঞান সম্পর্কিত নির্ভুল তথ্য প্রদান করেছেন এবং কুরআনে পাকের মাধ্যমে কিয়ামত পর্যন্ত এর ধারাবাহিকতা চলতে থাকবে। বৈজ্ঞানিকরা তাদের গবেষণার মাধ্যমে যতো কিছুই আবিষ্কার করুক না কেন সেটা ততক্ষণ পর্যন্ত নির্ভুল বা পূর্ণতা লাভ করতে পারবে না যতক্ষণ পর্যন্ত কুরআনে পাক এবং সুন্নতে নববী (সা.) এর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ না হবে।
ইসলাম এমন একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা বা complete code of life যা মানব জাতির প্রয়োজনীয় প্রতিটি বিষয়ে সুন্দর সুষ্ঠ ও বিজ্ঞানসম্মত সমাধান দিয়ে আসছে এবং কিয়ামত পর্যন্ত দিতে থাকবে। জ্ঞান-বিজ্ঞানের উৎকর্ষ সাধনে ইসলামের অবদান অসামান্য। আধুনিক বিজ্ঞানের নবজাগরণ সৃষ্টিতে ইসলামের ভূমিকা অনস্বীকার্য। ইসলামের সাথে বিজ্ঞানের কোনই বিরোধ নেই বরং সামঞ্জস্য আছে। বিজ্ঞানের পূর্ণতা তখনই লাভ করে যখন কুরআন ও সুন্নতে নববীর সাথে এর সাদৃশতা পাওয়া যায়, কিন্তু তথাকথিত কিছু গবেষক এই অবদানকে খুবই খাটো করে দেখার চেষ্টা করছেন। এটা বড়ই পরিতাপের বিষয়। ইসলাম সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা না থাকার কারণেই এমনটি হচ্ছে। মহাবিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ মানব, সর্বশ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী, নবী মুহাম্মদুর রাসুলাল্লাহ (সা.) বৈজ্ঞানিকদের গবেষণার জন্য অনেক উপাত্ত রেখে গেছেন, যা বিজ্ঞানীরা স্বীকার করতে বাধ্য।
বিংশ শতাব্দীর একজন শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী ড. মরিস বুকাইলি (১৯২০-৯৮) সে কথা অকপটে স্বীকার করেছেন। পেশায় চিকিৎসা weÁvbx, French Society of Egyptology-Gi একজন সদস্য এবং গবেষক ড. মরিস বুকাইলি ফিরাউনের ডুবে যাওয়া ও তার লাশ সংরক্ষণের ব্যাপারে গবেষণা করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছিলেন। একদিন জানতে পারেন কুরআনে পাকে এর বিশদ আলোচনা এসেছে। এ ঘটনা শুনে ড. মরিস বিস্মিত হয়ে প্রশ্ন করতে লাগলেন, এটা কিভাবে সম্ভব? এই মমি (সংরক্ষিত লাশ) পাওয়া গিয়েছে মোটে ১৮৮১ সালে, আর কুরআনে পাকের মাধ্যমে মুহাম্মদুর রাসুলাল্লাহ (সা.) ১৪০০ বছর আগেই এটা সম্পর্কে জানতেন? ড. মরিস কিছুদিন পর একজন মুসলিম বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হয়ে পবিত্র কুরআনের সেই (সুরা ইউনুস: ৯২) আয়াতটা তাঁকে শোনাতে বললেন। মুসলিম বিশেষজ্ঞ তাঁকে যখন আয়াতে করীমাটি শোনালেন তখন তিনি এই আয়াতের দ্বারা খুবই প্রভাবিত ও অভিভূত হয়ে ইসলাম গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়ে উচ্চকণ্ঠে ঘোষণা করলেন যে, আমি ইসলামে প্রবেশ করেছি এবং আমি এই কুরআনে বিশ্বাসী। (সুবহানাল্লাহ) ইসলাম গ্রহণের পর ১৯৭৬ সালে বাইবেল, কুরআন এবং বিজ্ঞান নামে একটি বই লিখেন যা পশ্চিমা বিজ্ঞানীদের টনক নাড়িয়ে দেয়। এ বইয়ের মাধ্যমে তিনি প্রমাণ করেন যে, মুহাম্মদুর রাসুলুল্লাহ (সা.)ই হলেন বিজ্ঞানের জনক। শুধু তাই নয়, আধুনিক বিজ্ঞানের সম্প্রতি কিছু গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কারের দিকে তাকালে আমরা আরোও অসংখ্য প্রমাণ দেখতে পাই। যেমন-
মহাকাশবিজ্ঞান: (space science)
সূরা আল-আম্বিয়া, ২১:৩০-এর এই আয়াতে করীমাটি বিশ্বের উৎপত্তির সাধারণ তত্ত্ব বর্ণনা করছে, যে সত্য আজ থেকে চল্লিশ বছর আগেও নিউক্লিয়ার পদার্থবিদ্যার সূচনার আগে আবিষ্কৃত হয়নি। এছাড়া কুরআন পাকের আরোও অসংখ্য আয়াতে করীমায় মহাকাশ বিজ্ঞানের কথা বলা হয়েছে। যেমন- সূরা আল-ফুসসিলাত, ৪১:১১, সূরা আয যারিয়াত, ৫১:৪৭, সূরা আল-লুকমান, ৩১:২৯, সূরা আয-যুমার, ৩৯:৫, সূরা ইউনুস, ১০:৫ ইত্যাদি। পৃথিবীর বিজ্ঞানীরা অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে দেখছে যে আধুনিক বিজ্ঞানের এসব আবিষ্কার এক এক করে নবী (সা.) এর ওপর নাযিলকৃত কুরআনে পাকের তথ্যের সাথে আশ্চর্যজনক ভাবে মিলে যাচ্ছে এবং পরিপূর্ণতা লাভ করছে। (সুবহানাল্লাহ)।
ভ্রুণতত্ত্ব (Embryology)
মাত্র কয়েক দশক পূর্বেও শক্তিশালী মাইক্রোস্কোপ আবিষ্কারের আগে Embryology (ভ্রুণতত্ত্ব) মানবীয় বিকাশের ধাপগুলি সম্পর্কে বিজ্ঞানীদের কিছুই জানা ছিল না। উনিশ শতকের শেষ দিকে বর্ণমালার প্রতীকের ওপর ভিত্তি করে মানব ভ্রুণের বিকাশের বিভিন্ন ধাপ চিহ্নিত করা হয় এবং বিশ শতকে সংখ্যার সাহায্যে এর ২৩টি ধাপ বর্ণনা করা হয়। কিন্তু সূরা আল-মু’মিনুন, ২৩: ১২-১৬ আয়াতে করীমাগুলোতে আল্লাহ প্রদত্ত জ্ঞানের মাধ্যমে নবী (সা.)-এর বিশুদ্ধ ও পরিপূর্ণ বর্ণনা দিয়েছেন। শীর্ষস্থানীয় ভ্রুণতত্ত্ববিদগণের অন্যতম কানাডার টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের এনাটমি বিভাগের প্রফেসর ও চেয়ারম্যান কিথ লিওন মুরি (Keith Leon Moore 1925) ১৯৮০ সালে তার এক বক্তব্যে বলেন, ‘এটা আমার কাছে পরিষ্কার যে এসব বক্তব্য নিশ্চয়ই আল্লাহর কাছ থেকে মুহাম্মদ (সা.)-এর কাছে এসেছে, কারণ এই জ্ঞানের প্রায় সবটুকুই অবিষ্কৃত হয়েছে এর বহু শতক পরে। এটা আমার কাছে প্রমাণ করছে যে, মুহাম্মদ (সা.) নিশ্চয়ই পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী এবং আল্লাহর রাসূল!’
ভূতত্ত্ব (Geology)
আমেরিকার বিজ্ঞান একাডেমীর প্রেসিডেন্ট ড. ফ্রাঙ্ক প্রেস তার Earth নামক বইটিতে সম্প্রতি আবিষ্কৃত ভূতত্ত্ব সম্পর্কে ব্যাখ্যা করেছেন যে পাহাড়-পর্বত হচ্ছে পেরেকাকৃতি বিশিষ্ট এবং এগুলো অবিভক্ত বস্তুর এক ক্ষুদ্র অংশ মাত্র, যার মূল মাটির গভীরে প্রোথিত। তার মতে, ভূ-পৃষ্ঠের আবরণকে স্থিতিশীল রাখতে পাহাড়-পর্বতগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অথচ দেড় হাজার বছর পূর্বে ভূতত্ত্ব সম্পর্কে ওহীর মাধ্যমে নিম্নে বর্ণিত আয়াত সমুহে আল্লাহ তার প্রিয় নবীকে জানিয়েছিলেন। সুরা আন-নাহল ১৬:২৫, সুরা আল-আম্বিয়া ২১:৩১, সূরা আল-লুকমান ৩১:১০, সূরা আন-নাবা’, ৭৮:৬-৭, আন-না’যিয়া ৭৯:৩২, আল-গা’সিয়া ৮৮:১৯।
পরমাণু বিজ্ঞান (Nuclear Science)
গ্রিক দার্শনিক Democritus ডেমোক্রিটাস (460 BC 370 BC) এই তত্ত্বের উদ্ভাবক হলেও আধুনিক বিজ্ঞান অতি সম্প্রতি পরমাণু বিজ্ঞান সম্পর্কে গবেষণা করে ‘এটম’ আবিষ্কার করেছে। Nuclear Scientist (পরমাণু বিজ্ঞানীরা) মাত্র ১৯৫০ সালে Nuclear Submarines (নিউক্লিয়ার সাবমেরিন) আবিষ্কার করেছে। অথচ এটম (Atom) সম্পর্কে সূরা সাবা, ৩৪:৩ এবং নিউক্লিয়ার সাবমেরিন সম্পর্কে সুরা আন-নুর ২৪:৪০ নাম্বার আয়াতদ্বয়ে আল্লাহ তার প্রিয় নবীকে অনেক আগেই জানিয়েছিলেন।
পর্দা বা হিজাবই হল ক্যান্সার প্রতিরোধক
বর্তমান সময়ে একটি বহুল আলোচিত বিষয় হল মহিলাদের পর্দা বা হিজাব! মানুষের ঝশরহ ঈধহপবৎ সম্পর্কে গবেষণা করে বিজ্ঞানীরা প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছেন যে, দিন দিন পৃথিবীতে কার্বনডাইঅক্সাইড কর্মাগত বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে সূর্যের অতি বেগুনী রশ্মি মানুষের ত্বকের ক্যান্সার সৃষ্টি করছে। সূর্যের এই অতি বেগুনী রশ্মি থেকে নিরাপদ থাকতে হলে অবশ্যই পরিপূর্ণভাবে কাপড় পরিধান করতে হবে। কিন্তু কি আশ্চর্য! আল্লাহ তাঁর নবী (সা.)-এর মাধ্যমে পর্দা প্রথাকে ফরদ্ব করে মহিলাদেরকে ঝশরহ ঈধহপবৎ এর মত মরণব্যাধি থেকে মুক্তির পথ দেখিয়ে দিয়েছেন।
সুন্নাতে রাসূল (সা.) ও আধুনিক বিজ্ঞান
রাসুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘পুরুষের প্যান্ট-কাপড় টাখনুর ওপর পরতে অন্যথায় তা জাহান্নামে যাবে’ (সহীহ আল-বুখারী: ৫৩৭১)।
বিজ্ঞান বলে, পুরুষের টাখনুর ভিতর প্রচুর পরিমানে সেক্সুয়াল হরমোন থাকে এবং তার আলো বাতাসের প্রয়োজন হয়। তাই কেউ যদি তা খোলা না রেখে ঢেকে রাখে তাহলে তার যৌনশক্তি কমে যাবে এবং বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হবে।
রাসূসুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘ভ্রুপ্লাগকারীর ওপর আল্লাহর লানত (সহীহ আল-বুখারী: ৫৫১৫)।’
বিজ্ঞান বলে, ভ্রু হল চোখের হিফাজতের জন্য। ভ্রুতে এমন কিছু লোম থাকে যদি তা কাটা পড়ে যায় তাহলে ভ্রুপ্লাগকারী পাগল অথবা মৃত্যুবরন করতে পারে।
রাসুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘প্রত্যেক নেশার বস্তুই হারাম’ (সহীহ আল-বুখারী: ৬১২৪)।
বিজ্ঞান বলে, ধুমপানের কারনে ফুস্ফুসের ক্যান্সার, ব্রংকাইটিস ও হৃদরোগ হয়ে মানুষ মারা যায়। ধুম্পান করলে ঠোট, দাঁতের মাড়ি, আঙ্গুল কালো হয়ে যায়। যৌনশক্তি ও ক্ষুধা কমে যায় এমনকি স্মৃতিশক্তি ও কমে যায়।
রাসুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘পুরুষের জন্য স্বর্ণ ব্যবহার হারাম’ (সহীহ মুসলিম: ১৬৫৫)।
বিজ্ঞান বলে, স্বর্ণ যেহেতু যৌগ পদার্থ তাই তা স্ক্রীনের সাথে মিশে ব্লাডের মাধ্যমে ব্রেনে চলে যায়। আর তার পরিমান যদি ২.৩ হয় তাহলে মানুষ তার আগের স্মৃতি সব হারিয়ে ফেলবে।
রাসুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘ঘুমানোর সময় আলো নিভিয়ে এবং ডান কাত হয়ে ঘুমাতে’ (সহীহ আল-বুখারী: ৩২৮০)।
বিজ্ঞান বলে, ডান কাত হয়ে ঘুমালে হার্ট ভালো করে পাম্প করে আর লাইট না নিভিয়ে ঘুমালে ব্রেনের এনাটমি রস শরিরে প্রবেশ করতে পারে না যার ফলে ক্যান্সার হওয়ার খুব সম্ভবনা থাকে।
রাসুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা গোফ ছেটে ফেল এবং দাড়ি রাখ’ (সহীহ মুসলিম: ৪৯৩, ৪৯৪)।
বিজ্ঞান বলে, দাড়ি না রাখলে স্ক্রিন ক্যান্সার, ফুস্ফুসের ইনফেকশন এবং ৪০ এর আগে যৌবন হারানোর সম্ভবনা থাকে। দাড়ি রাখার বিষয়ে গবেষকরা আরো বলেছেন, দাড়ি কামাতে গিয়ে মুখের চামড়ায় যে হালকা ঘষা লাগে, তা ব্যাকটেরিয়া বাসা বাঁধার জন্য আদর্শ পরিবেশ তৈরি করে।
আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘আর ব্যভিচারের কাছেও যেয়ো না। নিশ্চয় এটা অশ্লীল কাজ এবং ধ্বংসের পথ’ (বনি ইসরাঈল: ৩২) ‘এবং নেশাগ্রস্থ শয়তানের কাজ’ (মায়িদা: ৯০)।
বিজ্ঞান বলে, পর্নগ্রাফি , অশ্লিল সম্পর্ক সহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য নেশা। যদি কেউ এসব নেশজাত দ্রব্যে জড়িয়ে পড়ে তাহলে ব্রেনের ফরেন্টাল এরিয়ার আমাদের পরিচালনা করার ইনটেলুক্টুয়াল সেলগুলো থরথর করে কাপতে থাকে এবং অস্থির হয়ে যায়। যার ফলে সে নেশাগ্রস্থ হয়ে মাতাল- অসুস্থের মত জীবন পরিচালনা করে এবং তা তাকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেয়।
আল্লাহ বলেন, আর যখন কুরআন পাঠ করা হয়, তখন তাতে কান লাগিয়ে রাখ এবং নিশ্চুপ থাক যাতে তোমাদের ওপর রহমত হয়’ (আরাফ: ২০৪)।
বিজ্ঞান বলে, কুরআনের সাউন্ড ওয়েব শরিরের সেলগুলোকে সক্রিয় করে, অসুস্থতা আরোগ্য করে বিশেষ করে হার্ট এবং ক্যান্সার রোগিদের। আর ব্রেনকে এমনভাবে চার্জ করে যেমনভাবে ফিউজ হওয়া ব্যাটারিকে সচল করে।
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যখন তোমাদের কেউ পানাহার করতে চায় সে যেন তার ডান হাতে পানাহার করে, কেননা শয়তান বাম হাতে পানাহার করে’ (সহীহ মুসলিম)।
বিজ্ঞান বলে, মানুষের খাদ্য গ্রহণের সময় হাতের আঙ্গুল থেকে প্লাজমা নামক একধরণের হজমী রস নির্গত হয়। ডান হাতের আঙ্গুল থেকে নির্গত হয় পজেটিভ প্লাজমা যা খাদ্যদ্রব্য হজমে সহায়তা করে। আর বাম হাত থেকে নির্গত হয় নেগেটিভ প্লাজমা, যা খাদ্যদ্রব্য হজমে বিঘ্ন সৃষ্টি করে।
আনাস (রাযি.) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) কোন ব্যক্তিকে দাঁড়িয়ে পান করতে নিষেধ করেছেন। কাতাদা বলেন, আমরা বললাম, আর খাওয়া? তিনি বললেন, ‘সেটা তো আরো খারাপ, আরো নিকৃষ্ট’ (সহীহ মুসলিম)।
বিজ্ঞান বলে, মানুষ বসে পানি পান করলে সেটা আস্তে আস্তে খাদ্যনালির নিচের দিকে যায় (যেমন শিশুরা চুষে চুষে দুধ পান করে তেমনি চুষে চুষে/চুমুক দিয়ে পানি পান করা উত্তম)। কারণ খাদ্যনালীটা খুব দুর্বল, এর ভিতরে পাতলা পর্দা আছে। দাঁড়িয়ে পানি পান করলে খুব দ্রুত যায়, যা খাদ্যনালির পাতলা পর্দা বরদাশত করতে পারে না। ফলে খাদ্যনালির পাতলা পর্দা ফেটে গিয়ে আলসার, ক্যান্সারসহ নানাবিধ রোগ ব্যাধি সৃষ্টি হয়।
রাসূলুল্লাহ (সা.) পান পাত্রে নিঃশ্বাস ফেলতে এবং তাতে ফুঁক দিতে নিষেধ করেছেন (সহীহ আল-বুখারী, সহীহ মুসলিম ও মুস্তাদরাকে হাকিম)। আনাস (রাযি.) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) পান করার সময় তিনবার শ্বাস গ্রহণ করতেন এবং বলতেন এতে উত্তমরূপে তৃপ্তি লাভ হয়, পিপাসার ক্লেশ দুর হয় এবং অতি সহজে গলধঃকরণ হয়। আনাস (রাযি.) নিজেও দুই বা তিন নিঃশ্বাসে পান করতেন (সহীহ আল-বুখারী ও সহীহ মুসলিম)।
বিজ্ঞান বলে, প্রাণির নিঃশ্বাস ও ফুঁকের মাধ্যমে কার্বন ডাই অক্সাইড বের হয়ে পানির সাথে মিশ্রিত হলে কার্বলিক এসিড তৈরি হয়, যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।
রাসূলুল্লাহ (সা.) আহার শেষে আঙ্গুল ও বর্তন চেটে খেতে আদেশ করে বলেছেন, তোমরা জান না (খাদ্যের) কোন অংশে বরকত আছে (সহীহ মুসলিম)।
বিজ্ঞান বলে, খাদ্যের শেষ অংশে থাকে ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স। হাত দিয়ে খাবার খেলে হাতের আঙ্গুল থেকে নির্গত হয় প্লাজমা নামক হজমী রস, যা খাদ্যকে দ্রুত হজম করে।
রাসূলুল্লাহ (সা.) পাকস্থলির এক-ততীয়াংশ খাবার দিয়ে এবং এক-তৃতীয়াংশ পানি দিয়ে পূর্ণ করতে এবং বাকি অংশ খালি রাখতে বলেছেন (সুনানে ইবনে মাজাহ)। আয়েশা (রাযি.) বলেন, মুহাম্মদ (সা.)-এর পরিবার-পরিজন মদীনায় আসার পর হতে পরপর তিনদিন গমের আটার খাবার পেট ভরে খান নাই। আর এ অবস্থায়ই তিনি ইন্তেকাল করেন (সহীহ আল-বুখারী)।
বিজ্ঞান বলে, অতিভোজনের ফলে ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, স্ট্রোক, প্যারালাইসিস ইত্যাদি হওয়ার আশংকা বৃদ্ধি পায়। অতিরিক্ত খাদ্য পাকস্থলির সঙ্কোচন ও প্রসারণে বাঁধা দেয়। ফলে কোন পাচক রস নির্গত হতে পারে না, খাদ্যও হজম হয় না। শ্বেতসার জাতিয় খাদ্য বেশি পরিমাণে আহার করলে ডিসপেপসিয়া ও বহুমূত্র রোগ দেখা দেয়।
মহানবী (সা.) বলেছেন, তোমাদের কারো পাত্রে মাছি পতিত হলে সে যেন উক্ত মাছিটিকে ডুবিয়ে দেয়, তারপর সেটিকে দুরে নিক্ষেপ করে। কেননা এর একটি ডানায় আরোগ্য এবং অপর ডানায় রোগ (জীবাণু) থাকে (সহীহ আল-বুখারী)।
বিজ্ঞান বলে, মাছির এক ডানায় রোগ এবং অন্য ডানায় তার প্রতিশোধক রয়েছে।
বারা (রাযি.) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) শয়নকালে তার হাত ডান গালের নীচে রাখতেন (আদাবুল মুফরদ)। আয়েশা (রাযি.) বলেন, রাসুল (সা.) ফজরের সুন্নাত সালাত পড়ার পর ডান কাতে কিছুক্ষণ শয়ন করে আরাম করতেন (সহীহ আল-বুখারী)। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, ডান কাতে শোয়াই অধিক স্বাস্থ্যসম্মত।
বিজ্ঞান বলে, এতে হৃদপিণ্ডের ওপর চাপ পড়ে কম, পেটের ভিতর ভারী যকৃত ঝুলে থাকে না। ফলে পাকস্থলিতে চাপ পড়ে না। পাকস্থলির নড়াচড়া স্বাভাবিক থাকে এবং এর ভেতরের খাদ্যদ্রব্য হজমের উপযোগী হয়ে সহজেই খাদ্যনালীর পরবর্তী অংশে চলে যেতে পারে।
রাসূলুল্লাহ (সা.) ইশার সালাতের আগে ঘুমানোকে অপছন্দ করতেন এবং ইশার পর আলোচনা করাকে অপছন্দ করতেন (সহীহ আল-বুখারী)।
বিজ্ঞান বলে, রাত যখন গভীর হয় তখন মানুষের ঘুমানোর হরমোনগুলো নিঃসরণ হয়, যা দেহকে ঘুমের দিকে টানে। জ্ঞান বিজ্ঞানের গভীর কোন বিষয় মানুষ এ সময় অনুধাবন করতে পারে না।
রাসূলুল্লাহ (সা.) যখন কোন (বিশেষ) কথা বলতেন, তখন তা তিনবার বলতেন (সহীহ আল-বুখারী)।
বিজ্ঞান বলছে, মস্তিষ্কের তিনটা টার্ম আছে, লং টার্ম, মিডল টার্ম এবং শর্ট টার্ম। একটা কথা ব্রেনে গেলে প্রথমে সেটা শর্ট টার্মে যায়। কয়েক মিনিট পরে এ কথাটা হারিয়ে যায়। যদি পুনরায় কথাটা বলা হয় তবে সেটা মিডল টার্মে যায়। সেটা সহজে হারাবে না। যদি আরেকবার বলা হয় তবে সেটা শ্রোতার মস্তিষ্কের লং টার্মে চলে যায়। সেটা দীর্ঘসময় স্মরণ থাকে, আর ভুলে না।
রাসূলুল্লাহ (সা.) এবং তার সাহাবীগণ কখনো টুপিসহ পাগড়ী আবার শুধু পাগড়ী কিংবা শুধু টুপিও পরিধান করতেন, কেউ কেউ মাঝে মধ্যে মাথায় রূমাল ব্যবহার করতেন (সহীহ আল-বুখারী ও মুসলিম)।
বিজ্ঞান বলছে, বর্তমানে আমরা দেখতে পাই যে, ডাক্তাররাও বিশেষতঃ অপারেশনের সময় টুপি পরিধান করেন নইলে মাথার চুলের গোড়া দিয়ে জীবাণু প্রবেশ করে ইনফেকশন হতে পারে।
আয়েশা (রাযি.) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, খানা সামনে আসলে কোন সালাত নেই, পেশাব-পায়খানার বেগ থাকা অবস্থায়ও কোন সালাত নেই (সহীহ মুসলিম: ১১২৮ ও সহীহ আল-বুখারী: ৬৬৫)।
আজকের বিজ্ঞান বলছে, দীর্ঘ সময় মলমূত্র চেপে রাখলে মূত্রাশয়ে পাথরের ন্যায় মারাত্মক রোগের সৃষ্টি হয়।
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, জ্বরের প্রচণ্ডতা জাহান্নামের উত্তাপ থেকে। তাই তোমরা পানি দিয়ে তাকে ঠাণ্ডা কর (সহীহ মুসলিম: ৫৫৬৪)।
বর্তমান চিকিৎসা ব্যবস্থায় জ্বরের চিকিৎসায় অন্যান্য ঔষধের পাশাপাশি পানি ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হয়।
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমাদের কেহ এক পায়ে জুতা পরে চলবে না। হয় উভয় পায়ে জুতা পরবে, না হয় উভয় জুতা খুলে রাখবে (সহীহ আল-বুখারী)।
বিজ্ঞান বলে, শীতের দিনে এক পায়ে জুতা পরলে যেটিতে জুতা পরা থাকবে সেটা থাকবে উষ্ণ, রক্ত চলাচল ঠিকমতো হবে। আর যেটিতে জুতা থাকবে না সেটা শীতল হবে; ফলে রক্ত চলাচল ঠিকমতো হবে না। এভাবে রক্ত চলাচলে অসমতা দেখা দিয়ে শিরা-উপশিরা অকেজো, অসার ও পঙ্গু হতে পারে।
আবু হুরায়রা (রা) সূত্রে। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, পাঁচটি কাজ ফিতরাতের অন্তর্ভূক্ত। খাতনা করা, গোঁফ খাটো করা, নখ কাটা, বগলের পশম উপড়ে ফেলা এবং নাভীর নিচের পশম মু-ন করা (সহীহ মুসলিম: ৪৮৬)।
বিজ্ঞান বলে, জন্মের পর শিশুদের খাতনা করানো হলে মূত্রনালির প্রদাহ ৯০ শতাংশ হ্রাস পাবে। খাতনা না করালে লিঙ্গে পাঁচড়া, গনেরিয়া ও সিফিলিস জাতিয় রোগ বেশি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
অজু করার উপকারিতা
চিকিৎসকদের অভিজ্ঞতা থেকে এটাই প্রমাণিত হয় যে, মানব দেহের বিষাক্ত পদার্থসমূহ লোমকুপের গোড়া দিয়ে বের হয়ে হাত, পা, মুখ ও মাথার ওপর এসে থেমে যায়। খোলা অঙ্গসমূহ ধোয়া না হলে ধূলাবালি পতিত হয়ে লোমকুপের গোড়া বন্ধ হয়ে যায়। ফলে বিষাক্ত উপাদানসমূহ পুনরায় দেহের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে বিভিন্ন ধরণের বিষাক্ত ফোঁড়া ও টিউমার বা এ জাতীয় রোগ ব্যাধি হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়। দেহের সেই অঙ্গসমূহ ধোয়ার ফলে বিষাক্ত পদার্থসমূহ দূরীভূত হয়ে যায়। যদি নাকের ভিতর হতে ধৌত করা না হয় তবে নাকের ভিতরে জমে থাকা শ্লেষ্মা দ্বারা মস্তিষ্কের বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হতে পারে। কোন ব্যক্তি মূর্ছিত হলে বা কারো রক্তক্ষরণ হলে চিকিৎসকেরা তার উল্লেখিত অঙ্গসমূহে পানি ছিটানোর কথা বলে থাকেন, তেমনি শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ পানি দ্বারা ধৌত করলে শরীরের শীতল হয়ে আসে। ফলে ক্রোধ, অভিমান, অহংকার, বিতৃষ্ণা, ঘৃণা মন থেকে দূরীভূত হয়ে এক অনাবিল শান্তি অনুভূত হয়।
সালাতের উপকারিতা
দেহকে সচল রাখার জন্য প্রয়োজন সুষ্ঠু রক্ত সঞ্চালন, অক্সিজেন প্রবাহ এবং বিপাক। পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে দেখা যায় যে, সালাত আদায়ের মাধ্যমে দেহের রক্ত সঞ্চালন, অক্সিজেন প্রবাহ এবং বিপাক ক্রিয়া স্বাভাবিক ও সক্রিয় থাকে। ফলে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। সালাতের মধ্যে ঠিকমতো রুকু সিজদা করার ফলে শরীরে ৩৬০টি জয়েন্ট এবং ২০৬টি হাঁড় সমানে প্রভাবিত হয় এবং মস্তিষ্কের অতি সূক্ষ কৌশিক জালিকায় রক্ত প্রবাহিত হয়। নিয়মিত সালাত আদায়ের দরূণ বিপাক ক্রিয়া দ্রুত ঘটে এবং কোষের ভিতর শক্তি তৈরি হয়।
রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর কথা-কাজ, আচার-আচরণ, ইশারা-ইঙ্গিত, উঠা-বসা, চলাফেরা, দৈনন্দিন আমল তথা সব কর্মকাণ্ডই বিজ্ঞানসম্মত। ইসলামকে পূর্ণাঙ্গরূপে জানতে ও মানতে হলে সুন্নতে নববীর জ্ঞান এবং এর ওপর পরিপূর্ণ আমল অতীব জরুরী। রাসূলুল্লাহ (সা.) থেকে এমন কোনো সুন্নত বর্ণিত নাই যা বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে ক্ষতিকর। প্রায় দেড় হাজার বছর আগে বর্ণিত সুন্নতকে বর্তমান বিজ্ঞান শুধু সমর্থনই করেনি বরং মানুষের সমৃদ্ধিময় জীবনযাপনের জন্য তা পালনের জোরালো তাগিদ পর্যন্ত দিয়েছে।
রোজা
রাসূল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি শরীয়তের ওযর ছাড়া এ মাসের একটি রোযাও ছেড়ে দিবে সে যদি সারা বছর সিয়াম পালন করে তবুও তার পাপের খেসারত হবে না (সহীহ আল-বুখারী)।
বিজ্ঞান বলে, মানুষের শরীরে ক্ষতিকর বিষাক্ত উপাদানের জন্ম হয়, যার অধিকাংশ খাদ্য ও পরিবেশ দুষিত হওয়ার কারণে হয়ে থাকে। বিশেষ করে বর্তমান যুগে যন্ত্র চালিত যানবাহনের কারণে পরিবেশ দূষিত হওয়ার ফলে মানুষ বিভিন্ন ধরণের নতুন নতুন রোগে আক্রান্ত হয়। তন্মধ্যে ক্যান্সার, ব্লাড প্রেসার, ফুসফুস, হার্ট ও ব্রেন টিউমার ইত্যাদি। দার্শনিক ও চিকিৎসাবিদগণ মুক্ত কণ্ঠে স্বীকার করেছেন যে, সীয়াম সাধনা শরীর ও মন উভয়ের জন্য অত্যন্ত উপকারী। প্রখ্যাত গ্রন্থ Science calls For fasting-G বলা হয়েছে, সঠিকভাবে রোযা রাখলে মনে হবে যেন দেহ নব জন্ম লাভ করেছে After a fast properly taken, the bodz is literally born afresh| চিকিৎসা বিজ্ঞানী ম্যাক ফ্যাডেন বলেছেন, সীয়াম সাধনা করলে বুদ্ধিবৃত্তিক উৎকর্ষ সাধিত হয়। The longer one fasts the greater becomes his intellectual power and the clearer his intellectual vision.
ডা. জুয়েলস, ডা. ডিউই, ডা. এলেক্স হিউ প্রমুখ প্রখ্যাত চিকিৎসা বিজ্ঞানীগণ স্বীকার করেছেন যে, রোযা শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এর ফলে দেহের জীবানুবর্ধক অন্ত্রগুলি ধ্বংস হয়, ইউরিক এসিড বৃদ্ধি বাধাপ্রাপ্ত হয়। রোযা চর্মরোগ, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, গ্যাস্ট্রিক আলসার ইত্যাদির জন্য অত্যন্ত উপকারী বিবেচিত হয়েছে। মেদ ও কোলেষ্টরেল কমানোয় রোযার জুড়ি নেই। সর্বোপরি রোযা মনে শান্তি আনে, কুপ্রবৃত্তি প্রশমিত করে, দীর্ঘ জীবন দান করে। আজ উন্নত বিশ্বে বিভিন্ন জটিল রোগের প্রশমনের ব্যবস্থা পত্রে চিকিৎকগণ রোযা রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন।
উপসংহার
বিজ্ঞানের জনক নবী মুহাম্মদ (সা.) এর মত এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধের প্রষ্ফুটন এই স্বল্প পরিসরে করা সম্ভব নয়! কারণ পৃথিবীর এ সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব সম্পর্কে গবেষণা করতে গিয়ে কেবল মুসলমানরা নয় বরং অমুসলিমরাও বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। বর্তমান শতাব্দীতে আধুনিক বিজ্ঞানের জনকরা বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয়ে যথা- Anatomy (দেহবিজ্ঞান), Chemistry (রসায়ন), Astronomy (জ্যোতির্বিজ্ঞান), Geology (ভূতত্ত্ব), hydrology (জলানুসন্ধান বিজ্ঞান), Biology (জীব বিজ্ঞান), physics (পদার্থবিদ্যা), Cosmology (সৃষ্টিতত্ত্ব) ইত্যাদি সম্পর্কে কেবল অনুসন্ধান পেতে শুরু করেছেন। কিন্তু প্রায় দেড় হাজার বছর আগের সুন্নতে নববী (সা.) এবং কুরআনে পাকের মর্ম বোঝার চেষ্টা করলে দেখা যাবে নবী মুহাম্মদুর রাসুলুল্লাহ (সা.)ই ছিলেন বিজ্ঞানের জনক।
তথ্যসূত্র
বৈজ্ঞানিক মুহাম্মদ (সা.), লেখক মুহাম্মদ নুরুল ইসলাম,
The Bible, the Quran, and Science by Dr. Maurice Bucaille,
The science and sunnah Vl. 2 by Muhammad Abd Al-Mannan,
The Scientific Miracles of the Quran by Harun Yahya,
সুন্নতে রাসুল (সা.) ও আধুনিক বিজ্ঞান, লেখক: হাকিম মুহাম্মদ তারেক মাহমুদ চুগতাই