তাকওয়া: কল্যাণের এক নির্মল স্রোতধারা
সুমাইয়া তাসনীম
মানুষের মধ্যে দুটি পরস্পর বিরোধী প্রবণতা বা শক্তির পাশাপাশি সাংঘর্ষিক অবস্থানে বিদ্যমান। তা হচ্ছে, ভালো-মন্দ, সত্য-মিথ্যা, ন্যায়-অন্যায়, কল্যাণ-অকল্যাণ, আলো-অন্ধকার ইত্যাদি। এ পরস্পর বিরোধী দুই প্রবণতার মধ্য থেকে ভালো ও কল্যাণময় প্রবণতা বেছে নিয়ে সেটাকে দৃঢ়ভাবে ধারণ করা এবং এর ওপর প্রতিষ্ঠিত থাকার ফলে যত কঠিন পরীক্ষা ও অবস্থারই মুকাবিলার সম্মুখীন হোক না কেন, তা ধৈর্য ও সাহসের সাথে উত্তীর্ণ হওয়া এটাই প্রকৃত তাকওয়া। অর্থাৎ মানবীয় সহজাত সুকুমার বৃত্তি বা আকাঙ্ক্ষা যা মানুষকে কুপ্রবৃত্তি তথা মন্দ কথা, খারাপ কাজ ও দুষ্ট চিন্তা থেকে বিরত রাখে, তাকেও তাকওয়া বলা হয়। বর্তমান সমাজ ব্যবস্থার রন্ধ্রে রন্ধ্রে অন্যায়-পাপাচার, অনাচার-অত্যাচার, শিরক, কুফর, বিদায়াত, দুর্নীতি, ঘুষ আর সুদ অক্টোপাসের মতো ছড়িয়ে আছে। অন্ধকারের অতল গহবরে ক্রমান্বয়ে তলায়মান ও পতনোন্মুখ এ সমাজের বিষবাষ্প থেকে একজন মুমিনকে আত্মরক্ষা করে সাবধানে জীবনের পথ অতিক্রম করতে হবে। তাকওয়াই হচ্ছে এর একমাত্র পন্থা। আল্লাহর ঘোষণা অনুযায়ী এটিই যাবতীয় কল্যাণের মূল উৎস।
তাকওয়া কি?
তাকওয়া অর্থ হচ্ছে বাঁচা, আত্মরক্ষা করা, নিষ্কৃতি লাভ করা। অর্থাৎ আল্লাহর ভয় ও তার সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে যাবতীয় অপরাধ, অন্যায় ও আল্লাহর অপছন্দনীয় কাজ, কথা ও চিন্তা থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখার নাম তাকওয়া।
হযরত আলী (রাযি.) খুব সুন্দর ও সহজভাবে তাকওয়ার সংজ্ঞা দিয়েছেন, যা বোঝা এবং আমল করা খুব সহজ। তাঁর মতে তাকওয়া হল চারটি বিষয়; এক. আল্লাহর ভয়, দুই. কুরআনে যা নাযিল হয়েছে তদানুযায়ী আমল, তিন. অল্পেতুষ্টি, চার. শেষ দিবসের জন্য সদা প্রস্তুতি।
হযরত ওমর (রাযি.) একবার হযরত কা’ব (রাযি.) তাকওয়া সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে কা’ব (রাযি.) জিজ্ঞেস করলেন, ‘আপনি কি কখনও কণ্টকময় পথে হেঁটেছেন?’ হযরত ওমর (রাযি.) হ্যাঁ বললে তিনি আবার জিজ্ঞেস করলেন, ‘আপনি সেই পথ কিভাবে পার হন?’ হযরত ওমর (রাযি.) উত্তরে বললেন যে তিনি খুব সন্তর্পনে নিজের কাপড় গুটিয়ে সেই রাস্তা পার হন যেন কোনভাবেই কাঁটার আঘাতে কাপড় ছিঁড়ে না যায় অথবা শরীরে না বিঁধে। হযরত কা’ব উত্তরে বললেন যে, এটাই হল তাকওয়া। দুনিয়ার জীবনে নিজেকে সমস্ত গুনাহ থেকে এভাবে বেঁচে চলাই হল তাকওয়া।
হযরত হাসান আল-বাসারী (রহ.) বলেছেন, ‘তাকওয়া হল দীনের ভিত্তি, এটি ধ্বংস হয় লোভ এবং আকাঙ্ক্ষার মাধ্যমে।’
হযরত মাওলানা গুলাম হাবীব (রহ.) তাকওয়ার সংজ্ঞা দিতে গিয়ে বলেছেন যে, তাকওয়া হল সে সমস্ত বিষয় পরিত্যাগ করা, যেগুলো বান্দাকে আল্লাহর নৈকট্য লাভে বাধা সৃষ্টি করে।
ইবনে রজব হাম্বলী (রহ.) বলেন, ‘তাকওয়া মানে আনুগত্যশীল কর্মের মাধ্যমে এবং নাফরমানিমূলক বিষয় থেকে বিরত থাকার মাধ্যমে আল্লাহর ক্রোধ এবং শাস্তি থেকে বেঁচে থাকা।’
কুশাইরী (রহ.) বলেন, ‘প্রকৃত তাকওয়া হল, শিরক থেকে বেঁচে থাকা, তারপর অন্যায় ও অশ্লীল বিষয় পরিত্যাগ করা, অতঃপর সংশয়পূর্ণ বিষয় থেকে বিরত থাকা, এরপর অনর্থক আজেবাজে বিষয় বর্জন করা।’
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাযি.) বলেন, ‘তাকওয়া হচ্ছে, আল্লাহর আনুগত্য করা, নাফরমানি না করা। তাঁকে স্মরণ করা, ভুলে না যাওয়া। তাঁর কৃতজ্ঞতা করা, কুফরি না করা।’
হযরত সাহল ইবনে আবদুল্লাহ বলেন, ‘বিশুদ্ধ তাকওয়া হল-ছোট-বড় সব ধরণের গুনাহের কাজ পরিত্যাগ করা।’
যওবানী বলেন, ‘আল্লাহ থেকে দূরে রাখবে (তাঁর ক্রোধ ডেকে নিয়ে আসবে) এমন সকল বিষয় বর্জন করার নামই তাকওয়া।’
হযরত হাসান আল-বাসারী (রহ.) বলেন, ‘এ প্রকার (পশমের) ছেঁড়া-ফাটা পোশাকে তাকওয়ার কিছু নেই। তাকওয়া হচ্ছে এমন বিষয় যা হৃদয়ে গ্রোথিত হয়, আর কর্মের মাধ্যমে তা বাস্তবায়ন হয়।’
হযরত ওমর ইবনে আবদুল আযীয (রহ.) বলেন, ‘দিনে সিয়াম আদায় এবং রাতে নফল সালাত আদায়ই আল্লাহর ভয় নয়, বরং প্রকৃত আল্লাহর ভয় হচ্ছে, আল্লাহ যা হারাম করেছেন তা পরিত্যাগ করা, তিনি যা ফরয করেছেন তা বাস্তবায়ন করা। কেউ যদি এর অতিরিক্ত কিছু করতে পারে তবে সোনায় সোহাগা।’ প্রকাশ্যে পাপের কাজ পরিত্যাগ করার নাম তাকওয়া নয়; বরং গোপন-প্রকাশ্য সবধরনের পাপের কাজ পরিত্যাগ করার নামই আসল তাকওয়া। যেমন রাসূল (সা.) বলেন, ‘তুমি যেখানেই থাকনা কেন আল্লাহকে ভয় কর।’ (সুনানে তিরমিযী)
রাসুল (সা.) তাকওয়ার পরিচয়ে বলেন, ‘যে বিষয় মানুষকে সবচেয়ে বেশি জান্নাতে নিয়ে যায় তা হল, তাকওয়া এবং উত্তম ব্যবহার; আর যে বিষয় মানুষকে সবচেয়ে বেশি জাহান্নামে নিয়ে যায় তা হল, জিহ্বা এবং লজ্জাস্থান।’ (সুনানে তিরমিযী)
তাফসীর ইবনে কসীরে উল্লেখ আছে যে, আতিয়া আস-সা’দী হতে বর্ণিত রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘বান্দা ততক্ষণ পর্যন্ত মুত্তাকী হতে পারবে না, যতক্ষণ না সে, সে সব সন্দেহযুক্ত বিষয় ত্যাগ না করে, যার মাধ্যমে হারামে পতিত হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ ও তিরমিযী)
তাকওয়ার স্তরসমূহ
তাকওয়ার তিনটি স্তর রয়েছে। সর্বনিম্ন স্তর হলো কুফর ও শিরক থেকে বেঁচে থাকা। এ অর্থে প্রত্যেক মুসলমানকে আল্লাহভীরু বলা যায়। যদিও সে গোনাহের কাজে লিপ্ত থাকে। এ অর্থ বোঝানোর জন্যই কুরআনে করিমে অনেক জায়গায় মুত্তাকী ‘আল্লাহভীরু’ ও তাকওয়া ‘খোদাভীরুতা’ শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে।
দ্বিতীয় স্তর যা আসলে কাম্য-তা হলো এমন সব বিষয় থেকে বেচে থাকা, যা আল্লাহ তাআলা ও তার রাসুল (সা.)-এর পছন্দনীয় নয়। কুরআন ও হাদীসে যে তাকওয়ার যেসব ফযীলত ও কল্যাণ প্রতিশ্রুত হয়েছে, তা এ স্তরের তাকওয়ার ওপর ভিত্তি করেই হয়েছে।
তৃতীয় স্তরটি তাকওয়ার সর্বোচ্চ স্তর। আম্বিয়া (আ.) ও তাঁদের বিশেষ উত্তরাধিকারী অলীগণ এ স্তরের তাকওয়া অর্জন করে থাকেন। অর্থাৎ অন্তরকে আল্লাহ ব্যতীত সবকিছু থেকে বাঁচিয়ে রাখা এবং আল্লাহর স্মরণ ও তার সন্তুষ্টি কামনার দ্বারা পরিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ রাখা। মহান আল্লাহ বলেছেন, আল্লাহকে ভয় করো যেমনভাবে করা উচিত অর্থাৎ তাকওয়ার ওই স্তর অর্জন কর, যা তাকওয়ার হক।
তাকওয়া অর্জনের উপায়
ফরয-নফল সবধরনের ইবাদত ধারাবাহিকভাবে ও অধিক হারে করা। আল্লাহ বলেন, ‘হে লোক সকল তোমরা ইবাদত কর তোমাদের রবের যিনি তোমাদেরকে এবং তোমাদের পূর্ববর্তীদেরকে সৃষ্টি করেছেন, যাতে করে তোমরা তাকওয়াবান হতে পার।’ (সূরা আল-বাকারা: ২১)
রাসূল (সা.)-কে সম্মান করা, তাঁর সুন্নতকে বাস্তবায়ন করা, তা প্রচার-প্রসারের জন্য প্রচেষ্টা চালানো, শুধু তাঁর নির্ধারিত পদ্ধতিতেই আল্লাহর ইবাদত করে তাঁর নৈকট্য কামনা করা। তাঁর দীনের মাঝে কোন বিদআতের অনুপ্রবেশ না ঘটানো। আর সেই সাথে যাবতীয় পাপাচার থেকে বিরত থাকা। যেমনটি তলক ইবনে হাবীব বলেন, ‘তাকওয়া হচ্ছে, তুমি আল্লাহর আনুগত্যের কাজ করবে তাঁর নির্দেশিত পথে এবং আশা করবে আল্লাহর প্রতিদানের। তুমি আল্লাহর নাফরমানি ছেড়ে দেবে তাঁর নুরের ভিত্তিতে এবং আল্লাহর শাস্তির ভয় করবে।’
আল্লাহ তাআলার নৈকট্য অর্জনের জন্য ওয়াসীলা তালাশ করা। মুফাসসিরগণ এর বিভিন্ন ব্যাখ্যা করেছেন। কেউ বলেছেন, ওসীলা হচ্ছে, নেক আমল। যত বেশি নেক আমল করবে, ততই তাকওয়া হাসিল হবে এবং আল্লাহ তাআলার নৈকট্য অর্জিত হবে। কেউ অন্য ব্যাখ্যাও করেছেন। একটি ব্যাখ্যা হল-যার সমর্থন অন্য আয়াতেও পাওয়া যায় ওয়াসীলা তালাশ করার অর্থ এমন ব্যক্তিদের সাহচর্য গ্রহণ করা, যাঁরা তাকওয়ার গুণে গুণান্বিত| এটি তাকওয়া অর্জনের সবচেয়ে সহজ ও সবচেয়ে ফলপ্রসূ পন্থা। সাহচর্যের গভীর প্রভাব রয়েছে। এর গুণে মানুষের কর্ম ও চিন্তায় এবং চরিত্র ও নৈতিকতায় পরিবর্তন আসে। দীন মূলত সাহচর্যের মাধ্যমেই এসেছে। সাহাবায়ে কেরাম রা. প্রিয়নবী (সা.)-এর সাহচর্য লাভ করেছিলেন। সাহাবীদের সাহচর্য লাভ করেছেন তাবেঈগণ। এভাবে তাবেঈগণের সাহচর্য লাভ করেছেন তাবে তাবেঈগণ। তাঁদের যুগকেও গণ্য করা হয়েছে সর্বোত্তম যুগের মাঝে। তাই প্রকৃতপক্ষে বুযুর্গানে দীনের সাহচর্য দ্বারাই মানুষের মাঝে দীন সৃষ্টি হয়।
আল্লাহর কাছে চাওয়া এবং চাইতেই থাকা। এর একটি উপায় হচ্ছে, জীবনের সকল কাজে মাসনূন দুআর অভ্যাস করা। দুআর প্রথম উপকারিতা হচ্ছে, দুআ একটি ইবাদত। প্রার্থিত বস্তু পাওয়া যাক বা না যাক দুআর কারণে সাথে সাথে নেকি লেখা হয়। দুআর দ্বারা বান্দার আমলনামা ভারি হতে থাকে। দ্বিতীয় ফায়েদা হচ্ছে, দুআর দ্বারা বান্দা আল্লাহ তাআলার নিকটবর্তী হয়। তৃতীয় ফায়েদা হচ্ছে, বান্দার জন্য প্রার্থিত বিষয় যদি কল্যাণকর হয় তাহলে প্রার্থিত বস্তুই তাকে দান করা হয়। অন্যথায় এর বিনিময় আল্লাহ তাআলা তাকে অন্যভাবে দান করেন।
আল্লাহর সব ধরণের নাফরমানি থেকে বেচে থাকা। সমস্ত প্রশংসা সেই আল্লাহর যিনি তোমাদের থেকে জাহেলিয়াতের দোষ-ত্রুটি ও অংহকার দূরে করে দিয়েছেন। হে লোকেরা! সমস্ত মানুষ দু’ভাগে বিভক্ত। এক, নেক্কার ও পরহেজগার-যারা আল্লাহর দৃষ্টিতে মর্যাদার অধিকারী। দুই, পাপী ও দূরাচার যারা আল্লাহর দৃষ্টিতে নিকৃষ্ট। অন্যথায়, সমস্ত মানুষই আদমের সন্তান। আর আদম মাটির সৃষ্টি।’ (শুআবুল ঈমান ও সুনানে তিরমিযী)
কোন ব্যক্তির তাকওয়া আছে কি না তা তিনটি বিষয় দ্বারা সুস্পষ্ট হয়
(ক) যা এখনো অর্জিত হয়নি সে বিষয়ে আল্লাহর প্রতি পূর্ণ ভরসা রাখা।
(খ) যা পাওয়া গেছে তাতে পূর্ণ সন্তুষ্টি প্রকাশ করা এবং
(গ) যা পাওয়া যায়নি তার প্রতি পূর্ণ আশা ও বিশ্বাস রাখা যে তা পাওয়া যাবে।
ব্যক্তিজীবনে তাকওয়া অর্জনের
প্রভাব, ফলাফল ও প্রতিদান
- দুনিয়া এবং আখেরাতের সুসংবাদের সৌভাগ্য: আল্লাহ বলেন, ‘যারা ঈমান এনেছে এবং তাকওয়া অর্জন করেছে তাদের জন্য রয়েছে সুসংবাদ দুনিয়া এবং আখেরাতে।’ (সূরা ইউনুস: ৬৩-৬৪)
- আল্লাহর পক্ষ থেকে অভিভাবকত্ব ও সাহায্য-সহযোগিতার নিশ্চয়তা: আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয় আল্লাহ তাদের সাথে থাকেন, যারা আল্লাহকে ভয় করে এবং যারা সৎকর্ম করে।’ (সূরা আন-নাহাল: ১২৮)
- জ্ঞানার্জনের সুযোগ লাভ: আল্লাহ বলেন, ‘এবং আল্লাহকে ভয় কর; আল্লাহ তোমাদেরকে জ্ঞান দান করবেন।’ (সূরা আল-বাকারা: ২৮২)
- সত্যের পথ পাওয়া এবং হক ও বাতিলের মাঝে পার্থক্য বুঝতে পারা: আল্লাহ বলেন, তোমরা যদি আল্লাহকে ভয় করে; তবে তিনি তোমাদেরকে (হক ও বাতিলের মাঝে) পার্থক্য করার তাওফীক দেবেন।’ (সূরা আল-আনফাল: ২৯)
তাকওয়া মানুষের মধ্যে ন্যায়-অন্যায় ও সত্য-মিথ্যা পার্থক্য করার শক্তি জাগ্রত করে। আল্লাহ তাআলা এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘হে বিশ্বাসীগণ, যদি তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, তাকওয়া অর্জন কর, তবে তিনি তোমাদের ভালো-মন্দ পার্থক্য করার শক্তি দান করবেন।’ (সূরা আল-আনফাল: ২৯)
তাকওয়ার ফলে মানুষের বিবেক বুদ্ধি প্রখর হয় এবং সুষ্ঠু বিচার-বিবেচনা শক্তি জাগ্রত হয়। তাই সে সত্য-মিথ্যা ন্যায়-অন্যায় ও ভালো-মন্দ চিনতে এবং তা অনুধাবন করতে ভুল করে না। তার হাতে তাকওয়ার আলোকবর্তিকা থাকার ফলে জীবন পথের মন্দ দিকসমূহ সে স্পষ্টত দেখতে পায়। বিবেচনার শক্তির প্রখরতা ও বুদ্ধিদীপ্ততা তার মধ্যে এমনভাবে কাজ করে যে, তার কাছে তখন ইহ-পারলৌকিক যে কোন বিষয়ের কোনটি সঠিক আর কোনটি ভুল তা স্পষ্টতই ধরা পরে। ফলে সে কোন সংশয়, দ্বিধা-দ্বন্দ্ব, ইতস্তত, দুর্বলতা ও হীনমন্যতা ছাড়াই দিবালোকের মত সুস্পষ্ট ও সঠিক পথে চলতে সক্ষম হয়।
- গুনাহ মাফ এবং বিরাট প্রতিদানের সুসংবাদ: আল্লাহ বলেন, যে ব্যক্তি আল্লাহ কে ভয় করে, তিনি তার পাপসমূহ ক্ষমা করবেন এবং বিরাট প্রতিদানে ভূষিত করবেন।’ (সূরা আত-তালাক: ৫) তিনি আরও বলেন, ‘আর তোমরা যদি নিজেদেরকে সংশোধন করে নাও এবং আল্লাহকে ভয় কর, তবে তো আল্লাহ ক্ষমাশীল দয়াময়।’ (সূরা আন-নিসা: ১২৯)
- প্রত্যেক বিষয়ে সহজতা লাভ: আল্লাহ বলেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহকে ভয় করবে, তিনি তার প্রতিটি বিষয়কে সহজ করে দেবেন।’ (সূরা আত-তালাক: ৪)
- দুশ্চিন্তা ও বিপদ থেকে মুক্তি লাভ: আল্লাহ বলেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহকে ভয় করবে, তিনি তার জন্য মুক্তির ব্যবস্থা করে দেবেন।’ (সূরা আত-তালাক: ২)
- কষ্ট ও পরিশ্রম ছাড়া জীবিকা লাভ: আল্লাহ বলেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহকে ভয় করবে, তিনি তার জন্য মুক্তির ব্যবস্থা করে দেবেন। এবং এমনভাবে রিজিক দান করবেন, যা সে ভাবতেও পারেনি।’ (সূরা আত-তালাক: ২-৩)
- আযাব এবং শাস্তি থেকে পরিত্রাণ ও মুক্তি: আল্লাহ বলেন, ‘যারা তাকওয়া অর্জন করবে, তাদেরকে আমি মুক্তি দেব।’ (সূরা মারইয়াম: ৭২)
- সম্মানিত হওয়ার সনদপ্রাপ্তি: আল্লাহ বলন, ‘নিশ্চয় তোমাদের মধ্যে আল্লাহর নিকট সর্বাধিক সম্মানিত সেই ব্যক্তি, যে আল্লাহকে বেশি ভয় করে।’ (সূরা আল-হুজুরাত: ১৩)
রাসূল (সা.)-কে প্রশ্ন করা হল, মানুষের মাঝে কে সবচাইতে বেশি সম্মানিত? তিনি বললেন, তাদের মাঝে আল্লাহকে যে বেশি ভয় করে।’ (সহীহ আল-বুখারী ও মুসলিম)
- ভালবাসার সুসংবাদ: আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয় আল্লাহ পরহেযগারদের ভালবাসেন।’ (সূরা আত-তওবা: ৪)
- প্রতিদান পাওয়া এবং আমল বিনষ্ট না হওয়া: আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয় যে ব্যক্তি আল্লাহকে ভয় করবে এবং ধৈর্য Aej¤^b করবে; নিঃসন্দেহে আল্লাহ সৎকর্মশীলদের প্রতিদান বিনষ্ট করবেন না।’ (সূরা ইউসুফ ৯০)
- আমল কবুল হওয়া এবং তা প্রত্যাখ্যান না হওয়া: আল্লাহ বলেন, ‘আল্লাহ তো তাকওয়াবানদের থেকেই কবুল করেন।’ (সূরা আল-মায়িদা: ২৭)
- সামগ্রিক সফলতা: আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা আল্লাহ কে ভয় কর, তবে তোমরা সফলকাম হবে।’ (সূরা আল-বাকারা: ১৮৯)
- জান্নাতের নিশ্চয়তা: আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয় মুত্তাকীরা জান্নাত এবং ঝর্ণাধারার মধ্যে থাকবে।’ (সূরা আয-যারিয়াত: ১৫) ‘এটা ঐ জান্নাত; যার অধিকারী করব আমার বান্দাদের মধ্যে যারা তাকওয়াবান বা পরহেযগার।’ (সূরা মারিয়াম: ৬৩) আল্লাহকে ভয়কারী তাকওয়াবানরা থাকবে জান্নাতে ও নির্ঝরিণীতে। যোগ্য আসনে, সর্বাধিপতি সম্রাটের (আল্লাহর) সান্নিধ্যে।’ (সূরা আল-কামার: ৫৪-৫৫) ‘তাকওয়াবানদের জন্যে প্রতিশ্রুত জান্নাতের অবস্থা এই যে, তার নিম্নে নির্ঝরিণীসমূহ প্রবাহিত হয়। তার ফলসমূহ চিরস্থায়ী এবং ছায়াও। এটা তাদের প্রতিদান, যারা সাবধান হয়েছে এবং কাফেরদের প্রতিফল অগ্নি।’ (সূরা আর-রা’দ: ৩৫) রাসূল (সা.) কে প্রশ্ন করা হল, সর্বাধিক কোন জিনিস মানুষকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে? তিনি বলেন, ‘আল্লাহ ভীতি এবং সচ্চরিত্র।’ (সুনানে তিরমিযী)
- নিরাপত্তা এবং সুউচ্চ মর্যাদা: আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয় মুত্তাকীগণ সুউচ্চ নিরাপদ স্থানে থাকবে।’ (সূরা আদ-দুখান: ৫১)
- সৃষ্টিকুলের ওপর শ্রেষ্ঠত্ব: আল্লাহ বলেন, ‘এবং যারা তাকওয়া অর্জন করেছে তারা কিয়ামত দিবসে তাদের (কাফিরদের) ওপর অবস্থান করবে।’ (সূরা আল-বাকারা: ২১২)
- কিয়ামত দিবসে আল্লাহর নৈকট্য লাভ এবং তাঁর সাথে সাক্ষাত ও দর্শন লাভের সৌভাগ্য অর্জন: আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয় আল্লাহ ভীরুগণ জান্নাত এবং নহরের মধ্যে থাকবে। সত্য ও সন্তুষ্টির আবাস স্থলে পরাক্রমশালী বাদশাহর দরবারে।’ (সূরা আল-কামার: ৫৪-৫৫)
- বিশুদ্ধ অন্তর লাভ: আল্লাহ বলেন, ‘সেদিন (কিয়ামতের দিন) আল্লাহ ভীরুগণ ব্যতীত (দুনিয়ার) বন্ধুরা একে অপরের শত্রু হয়ে যাবে।’ (সূরা আয-যুখরুফ: ৬৭)
- সতর্ক ও সচেতন অন্তরের অধিকারী হওয়া: আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয় যারা তাকওয়া অর্জন করেছে-যখন তাদের ওপর শয়তানের আগমন ঘটে ততক্ষণাৎ তারা (সতর্ক হয়ে আল্লাহকে) স্মরণ করে, তারপর তারা সুপথ প্রাপ্ত হয়।’ (সূরা আল-আ’রাফ: ২০১)
- সুমহান প্রতিদান: আল্লাহ বলেন, ‘তাদের মধ্যে যারা সৎকর্ম করে এবং তাকওয়া অর্জন করে, তাদের জন্য রয়েছে সুমহান প্রতিদান।’ (সূরা আলে ইমরান: ১৭২)
- চিন্তা-ভাবনা এবং গবেষণা শক্তি অর্জন: আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয় রাত-দিনের পরিবর্তন এবং আসমান ও জমিনের মধ্যে আল্লাহ যা সৃষ্টি করেছেন, তার মধ্যে নিদর্শন রয়েছে এমন জাতির জন্য যারা আল্লাহকে ভয় করে।’ (সূরা ইউনুস: ৬)
- জাহান্নাম থেকে মুক্তি: আল্লাহ বলেন, ‘এবং অচিরেই জাহান্নাম থেকে দূরে থাকবে আল্লাহ ভীরুগণ।’ (সূরা আল-লাইল: ১৭)
- অফুরান্ত কল্যাণ লাভ: আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা পাথেয় সংগ্রহ কর; কেননা সর্বোত্তম ও শ্রেষ্ঠ পাথেয় হল তাকওয়া বা আল্লাহ ভীতি।’ (সূরা আল-বাকারা: ১৯৭)
- সুন্দর পরিণতি: আল্লাহ বলেন, ‘অতএব তুমি ধৈর্য অবলম্বন কর, নিশ্চয় শেষ পরিণতি মুত্তাকীদের জন্য।’ (সূরা হূদ: ৪৯)
- আল্লাহর বন্ধুত্ব লাভ: আল্লাহ বলেন, ‘আর আল্লাহ মুত্তাকীদের বন্ধু।’ (সূরা আল-জাসিয়া: ১৯)
নিশ্চয় আল্লাহ তাদের সঙ্গে আছেন, যারা পরহেযগার এবং যারা সৎকর্ম করে। (সুরা আন-নাহল: ১২৮)
তাকওয়ার সামাজিক প্রভাব ও সুফল
সামাজিক সচ্ছলতার ও দারিদ্র বিমোচনের গ্যারান্টি: আল্লাহ বলেন, ‘আর তোমাদের প্রভুর ক্ষমার প্রতি এবং জান্নাতের প্রতি দ্রুত এগিয়ে যাও, যার পরিধি হচ্ছে আসমান ও যমীন, যা প্রস্তুত করা হয়েছে মুত্তাকীদের জন্য। (মুত্তাকী হচ্ছেন তারা) যারা সচ্ছলতা ও অভাবের সময় (মানুষের প্রয়োজনে সম্পদ) ব্যয় করে, যারা নিজেদের রাগ-ক্রোধ সংবরণ করে এবং মানুষের প্রতি ক্ষমা প্রদর্শন করে। আর আল্লাহ সৎকর্মপরায়ণদেরকে ভালবাসেন। (মুত্তাকী তারাও) যারা কখনও কোন অশ্লীল কাজ করে ফেললে কিংবা কোন মন্দ কাজে জড়িত হয়ে নিজের ওপর যুলম করে ফেললে (সাথে সাথে) আল্লাহকে স্মরণ করে এবং নিজের পাপের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে। আর আল্লাহ ছাড়া আর কে পাপ ক্ষমা করবেন? আর তারা জেনে-শুনে নিজেদের (ভুল) কৃতকর্মসমূহ বারংবার করতে থাকে না।’ (সূরা আলে ইমরান: ১৩৩-১৩৫)
সমাজে সৎ ও কল্যাণের ধারা সৃষ্টি ও মন্দের মূলোৎপাটন: তারা (আহলে কিতাবগণ) সবাই সমান নয়। আহলে কিতাবগণের মধ্যে কিছু লোক এমনও আছে যারা অবিচলভাবে আল্লাহর আয়াতসমূহ পাঠ করে এবং রাতের গভীরে তারা সেজদায় রত থাকে। তারা আল্লাহর প্রতি ও কিয়ামত দিবসের প্রতি বিশ্বাস রাখে এবং কল্যাণকর বিষয়ের নির্দেশ দেয়: অকল্যাণ থেকে বারণ করে এবং সৎকাজের জন্য সাধ্যমত চেষ্টা করতে থাকে। আর এরাই হল সৎকর্মশীল। তারা যেসব সৎকাজ করবে, কোন অবস্থাতেই সেগুলোর প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শন করা হবে না. আর আল্লাহ মুত্তাকীদের বিষয়ে অবগত। (সূরা আলে ইমরান: ১১৩-১১৫)
সামাজিক নিরাপত্তার নিশ্চয়তা: শুধুমাত্র পূর্ব কিংবা পশ্চিম দিকে মুখ ফিরানোর মধ্যে কোন কল্যাণ নেই; বরং কল্যাণ হচ্ছে, যে ঈমান আনবে আল্লাহর ওপর, কিয়ামত দিবস, ফেরেশতাগণ, আসমানী কিতাবসমূহ ও নবী-রাসূলগণের ওপর; আর তাঁরই ভালবাসার মানসে আত্মীয়-স্বজন, ইয়াতীম, মিসকীন, মুসাফির-পথিক, ভিক্ষুক ও সর্বপ্রকার দাসত্ব থেকে মানুষকে মুক্তির জন্য সম্পদ ব্যয় করবে; আর যারা নামায প্রতিষ্ঠা করে, যাকাত প্রদান করে; আর যারা তাদের অঙ্গীকারসমূহ পূর্ণ করে যখন তারা অঙ্গীকার করে এবং অভাবে, রোগে-শোকে ও যুদ্ধের সময় ধৈর্যধারণকারী। আর তারাই হল সত্যাশ্রয়ী, আর তারাই তাকওয়া অবলম্বনকারী-মুত্তাকী| (সূরা আল-বাকারা: ১৭৭)
কুসংস্কার দূরীভূত হওয়া: ঘরের পিছন দিক থেকে প্রবেশের মধ্যে কোন কল্যাণ নেই; বরং কল্যাণ হচ্ছে পিছন দিক থেকে প্রবেশের মত কুসংস্কার বর্জন করে ঘরের দরজা দিয়ে সামনের দিক থেকে প্রবেশ করা। (সূরা আল-বাকারা: ১৮৯)
স্বনির্ভর সমাজ গঠন ও বেকারত্ব থেকে মুক্তি: স্বাবলম্বন বা আত্মনির্ভরতা হচ্ছে শ্রেষ্ঠ তাকওয়া। আয়-উপার্জন, শিক্ষা-প্রশিক্ষণ ও সুস্থ-স্বাভাবিক জীবন যাপনের সকল উপায়-উপকরণ অবলম্বন করে স্বাবলম্বী হয়ে চলার নাম তাকওয়া। সহায়-সম্বলহীন অবস্থায় আল্লাহর ওপর নির্ভর করে আল্লাহর রাস্তায় বেরিয়ে পড়া, স্থানীয় জনগণের ওপর বোঝা হওয়া, জীবন-জীবিকা নির্বাহের প্রয়োজনে কারো গলগ্রহ হওয়া, হাত পাতা, ভিক্ষে করা ও পরনির্ভরশীল হওয়া তাকওয়া হতে পারে না। কেবল হাদিয়া-তোহফার ওপর নির্ভর করে যারা জীবন-যাপন করে, তারা মুত্তাকী হতে পারে না। আত্মনির্ভরশীল জীবন গঠন এবং ব্যক্তি, সমাজ বা রাষ্ট্রের ওপর বোঝা হয়ে জীবন-যাপন থেকে বিরত থাকার মনোবৃত্তিকে তাকওয়া বলা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা হজের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেছেন, ‘আর তোমরা পাথেয় সাথে নিয়ে নাও। নিশ্চয় সর্বোত্তম পাথেয় হচ্ছে তাকওয়া। আর হে বুদ্ধিমানগণ! তোমরা আমাকেই ভয় করতে থাকো। (সূরা আল-বাকারা: ১৯৭)
ইমাম বায়যাভী বলেন, এখানে তাকওয়া শব্দের অর্থ হচ্ছে, ‘এমন সহায়-সম্বল অবলম্বন যা থাকার ফলে অন্যের কাছে হাত পাততে হয় না।এ আয়াতের শানে নুযুল ও ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, ‘এ আয়াতটি ইয়ামানের অধিবাসীদের প্রতি নাযিল হয়েছে। তারা হজ করত এমন অবস্থায় যে, প্রয়োজনীয় খাদ্য-সামগ্রী কিছুই তারা সঙ্গে নিয়ে যেত না এবং বলত, আমরা আল্লাহর নির্ভরশীল। ফলে তারা স্থানীয় জনগণের ওপর বোঝা হয়ে থাকত।’ কাজেই সর্বপ্রকার পরাধীনতা তথা জ্ঞান-বিজ্ঞান, অর্থ-সামর্থ, শক্তি-সাহস, কৃষ্টি-কালচার, সংস্কৃতি-সভ্যতা ইত্যাদি ক্ষেত্রে পরনির্ভরশীলতার অভিশাপ থেকে মুক্তি অর্জনের সর্বাত্মক চেষ্টা করা মুত্তাকী হওয়ার জন্য একান্ত প্রয়োজন।
সৎ জাতি গঠনের উপায়: তাকওয়া একটি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি। শিষ্টের লালন ও দুষ্টের দমন নীতির পরিচায়ক একটি শক্তি। ভালোকে গ্রহণ করার তীব্র আগ্রহ এবং মন্দকে পরিহার করে চলার দৃঢ় মনোবলই হচ্ছে তাকওয়া। মানুষের সকল সৎগুণের সঞ্জীবনী শক্তি হচ্ছে তাকওয়া। এ ক্ষেত্রে তাকওয়ার অধিকারী ব্যক্তিদের ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি ও কর্মকাণ্ডের বর্ণনা সংবলিত নিম্নোক্ত আয়াতগুলো প্রণিধানযোগ্য। যেমন- ‘এ গ্রন্থ (আল-কুরআন) পথ প্রদর্শনকারী পরহেযগারদের জন্য। পরহেযগার হচ্ছে তারা, যারা অদৃশ্য বিষয়ের ওপর বিশ্বাস স্থাপন করে, নামায প্রতিষ্ঠা করে এবং আমি তাদেরকে যে জীবিকা দিয়েছি তা থেকে ব্যয় করে; এবং যারা বিশ্বাস স্থাপন করে, সেসব বিষয়ের ওপর যা কিছু আপনার ওপর অবতীর্ণ করা হয়েছে, এবং যা কিছু আপনার পূর্ববর্তীদের ওপর অবতীর্ণ করা হয়েছে এবং তারা আখিরাতের প্রতিও দৃঢ় বিশ্বাস পোষণ করে। (সূরা আল-বাকারা: ২-৪)
জাতীয় উন্নতির সোপান: ‘আর যদি গ্রামের অধিবাসীরা ঈমান গ্রহণ করে ও তাকওয়া অবলম্বন করে অর্থাৎ তওবা করে তবে তাদের জন্য আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর কল্যাণসমূহ উন্মুক্ত করে দিতাম।’ (সূরা আল-আ’রাফ: ৯৬)