করোনা ভাইরাস ইসলামের আলোকে একটি বিশ্লেষণ
মুহাম্মদ হেদায়েত উল্লাহ
আল্লাহ তাআলা মানবজাতিকে অতিউত্তম আকৃতি দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। রোগ-ব্যাধি বা সমূহ বিপদাপদ দিয়ে ধ্বংস করার জন্য তিনি সৃষ্টি করেননি। এ পৃথিবীতে মানুষকে তিনি একমাত্র তাঁরই ইবাদত করতে পাঠিয়েছেন। মানুষকে তিনি তাঁর খলীফা বা প্রতিনিধিত্বের মর্যাদায় ভূষিত করেছেন। মানুষ আল্লাহর নির্দেশিত বাণী পবিত্র আল-কুরআন অনুযায়ী ও তাঁর প্রেরিত শেষ পয়গাম্বর মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রদর্শিত পথে সঠিকভাবে চলবে, যেন ইহকালে শান্তি ও পরকালে মুক্তি পায়। ইসলামের এই পথই হলো সত্যের পথ, মুক্তির পথ ও আলোর পথ। এ আলোকিত পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে মানুষ যখন নিশ্চিত ধ্বংসের দিকে ছুটবে ও বস্তুবাদী ধ্যান-ধারণার মোহে, দুনিয়াবি সফলতা লাভের খায়েশে বা সাম্রাজ্যবাদী চেতনায় অন্ধকারের দিকে ধাবিত হয় তখনই বান্দাকে সঠিক পথে আনার জন্যে আল্লাহ তাআলা বিভিন্ন রোগ-শোক ও বিপদাপদ দেন। যেন মানুষ আবার তার ভুল বুঝতে পারে, মহান রবের পথে ফিরে আসতে পারে। এই রোগ আমাদের গোনাহের কারণে হতে পারে। কারণ আল্লাহ তাআলা বলেছেন,
ظَهَرَ الْفَسَادُ فِي الْبَرِّ وَالْبَحْرِ بِمَا كَسَبَتْ اَيْدِي النَّاسِ ۰۰۴۱
‘স্থলে বা জলে যেসব ফাসাদ বা অনিয়ম ও বিশৃঙ্খলা প্রকাশ পায়, তা মানুষের হাতের কামাই।’ (সুরা আর-রুম: ৪১)
কিন্তু তাই বলে কারো এই রোগ দেখা দিলে আমরা বলতে পারবো না ওই লোকের পাপের কারণে এই রোগ হয়েছে। আমাদের পাপের কারণে রোগের প্রাদুর্ভাব হতে পারে, কারো হলে সেটা তার পাপের ফসল নয়। অনেক ছোট বাচ্চার এইডস হয়েছে, যারা কখনো সেক্সুয়ালি ট্রান্সমিটেড হওয়ার সুযোগ পায়নি, তবে অন্য কোনোভাবে ভাইরাস তার দেহে ঢুকে গেছে। কাজেই দুনিয়ায় কোনো মহামারী ছড়িয়ে পড়লে তাকে মহান আল্লাহর সংকল্প মনে করে নিতে হয়। তাকদীর হিসেবে মেনে নিয়ে নিজের বাসস্থানে শেষ পরিণতি ও মৃত্যু উভয়কে মেনে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়াই ঈমানের দাবি। রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সাহাবীদের জীবন পর্যালোচনা করলে আমরা দেখতে পাই যে, তাঁরা এই মৃত্যুকে শহীদী মরণ হিসেবে আখ্যা দেন।
عَنْ عَائِشَةَ i، زَوْجِ النَّبِيِّ ﷺ، قَالَتْ: سَأَلْتُ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ عَنِ الطَّاعُوْنِ، فَأَخْبَرَنِيْ: «أَنَّهُ عَذَابٌ يَبْعَثُهُ اللهُ عَلَىٰ مَنْ يَّشَاءُ، وَأَنَّ اللهَ جَعَلَهُ رَحْمَةً لِّلْمُؤْمِنِيْنَ، لَيْسَ مِنْ أَحَدٍ يَّقَعُ الطَّاعُوْنُ، فَيَمْكُثُ فِيْ بَلَدِهِ صَابِرًا مُّحْتَسِبًا، يَعْلَمُ أَنَّهُ لَا يُصِيْبُهُ إِلَّا مَا كَتَبَ اللهُ لَهُ، إِلَّا كَانَ لَهُ مِثْلُ أَجْرِ شَهِيْدٍ».
‘হযরত আয়িশা (রাযি.) থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, আমি মহানবী (সা.)-এর কাছে মহামারী সম্পর্কে জিজ্ঞেস করি। তিনি বলেন, ‘এটা এক ধরণের আযাব, যে জনগোষ্ঠীর ওপর আল্লাহ চান পাঠিয়ে থাকেন। তবে এটা মুমিনদের জন্য রহমত বানিয়ে দেন। যদি কোনো বান্দাকে এ মহামারী ধরে ফেলে, এরপর ওই শহরে ধৈর্য ধরে থাকে যে আল্লাহ তার ব্যাপারে যা-ই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তা-ই হবে। এরপর লোকটির মৃত্যু হলে শহীদের মতো সাওয়াব পাবে।’’ (সহীহ আল-বুখারী: ৪/১৭৫, হাদীস: ৩৪৭৪)
তবে এসব মহামারী সম্পর্কে আমাদের একটা সতর্কবার্তা আমাদের নবী (সা.) দিয়েছেন। তিনি বলেছেন,
«لَـمْ تَظْهَرِ الْفَاحِشَةُ فِيْ قَوْمٍ قَطُّ، حَتَّىٰ يُعْلِنُوْا بِهَا، إِلَّا فَشَا فِيْهِمُ الطَّاعُوْنُ، وَالْأَوْجَاعُ الَّتِيْ لَـمْ تَكُنْ مَضَتْ فِيْ أَسْلَافِهِمُ الَّذِيْنَ مَضَوْا».
‘কোনো জাতির মাঝে যদি অশ্লীল কার্যকলাপ বৃদ্ধি পায় এবং তারা তা প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়ে করে। তা হলে আল্লাহ তাদের মাঝে মহামারী ছড়িয়ে দেন এবং এমন সব রোগ দেন যা ইতঃপূর্বের কোনো জাতির মাঝে তা দেখা যায়নি।’ (সুনানে ইবন মাজাহ, ২/১৩৩২, হাদীস: ৪০১৯)
এ হাদীস এ যুগের মুসলিমদের জন্য খুবই উপকারী হতে পারে। আজ মহামারী হিসেবে করোনা ভাইরাস নামে যে রোগ আমাদের কাছে প্রকাশ পেয়েছে তা কোনো না কোনো অশ্লীলতা ব্যাপকতার ফল।
ইসলামের ইতিহাসের দিকে তাকালে আমরা দেখি, হযরত মুসা (আ.)-এর সম্প্রদায় চরম অবাধ্য হয়ে পড়েছিল। ফলশ্রুতিতে তাদের ওপর বিভিন্ন বিপদ-আপদ নেমে আসে। এ প্রসঙ্গে আল-কুরআনে এসেছে,
فَاَرْسَلْنَا عَلَيْهِمُ الطُّوْفَانَ وَالْجَرَادَ وَالْقُمَّلَ وَالضَّفَادِعَ وَالدَّمَ اٰيٰتٍ مُّفَصَّلٰتٍ١۫ فَاسْتَكْبَرُوْا۠ وَكَانُوْا قَوْمًا مُّجْرِمِيْنَ۰۰۱۳۳
‘অতঃপর আমি তাদেরকে প্লাবন, পঙ্গপাল, উকুন, ভেক ও রক্ত দ্বারা ক্লিষ্ট করি। এটা স্পষ্ট নিদর্শন। তারা দাম্ভিকই রয়ে গেলো, আর তারা ছিলো এক অপরাধী সম্প্রদায়।’ (সুরা আল-আ’রাফ: ১৩৩)
এ সীমাহীন বিপদে আক্রান্ত সম্প্রদায় এসব আযাবে অসহ্য হয়ে সবাই মুসা (আ.)-এর কাছে পাকাপাকি ওয়াদা করলো যে, তারা এসব আযাব থেকে মুক্তি পেলে হযরত মুসা (আ.)-এর ওপর ঈমান আনবে। হযরত মুসা (আ.) দুআ করলেন, ফলে তারা এসব আযাব থেকে মুক্তি পেল। কিন্তু যে জাতির ওপর আল্লাহর আযাব চেপে থাকে, তাদের বুদ্ধি-বিবেচনা, জ্ঞান-চেতনা কোনো কাজ করে না। কাজেই এ ঘটনার পরেও আযাব থেকে মুক্তি পেয়ে তারা আবারও নিজেদের হঠকারিতায় আঁকড়ে বসলো এবং ঈমান আনতে অস্বীকার করলো।
এ প্রসঙ্গ বর্ণনা করতে গিয়ে মহানবী (সা.) বলেছেন,
«الطَّاعُوْنُ رِجْسٌ أُرْسِلَ عَلَىٰ طَائِفَةٍ مِّنْ بَنِيْ إِسْرَائِيْلَ، أَوْ عَلَىٰ مَنْ كَانَ قَبْلَكُمْ، فَإِذَا سَمِعْتُمْ بِهِ بِأَرْضٍ، فَلَا تَقْدَمُوْا عَلَيْهِ، وَإِذَا وَقَعَ بِأَرْضٍ، وَأَنْتُمْ بِهَا فَلَا تَخْرُجُوْا، فِرَارًا مِّنْهُ».
‘মহামারী এমন একটি শাস্তি যা আল্লাহ বনী ইসরাঈলের ওপর পাঠিয়েছিলেন। সুতরাং যখন তোমরা শুনবে যে, কোথাও তা বিদ্যমান তখন তোমরা সেখানে যেয়ো না। আর যদি মহামারী এলাকায় তোমরা থাক, তবে সেখান থেকে পালানোর জন্য বের হয়ো না।’ (সহীহ আল-বুখারী: ৭/১৭৫, হাদীস: ৩৪৭৩)
عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَبَّاسٍ: أَنَّ عُمَرَ بْنَ الْـخَطَّابِ h، خَرَجَ إِلَى الشَّأْمِ، حَتَّىٰ إِذَا كَانَ بِسَرْغَ لَقِيَهُ أُمَرَاءُ الْأَجْنَادِ، أَبُوْ عُبَيْدَةَ بْنُ الْـجَرَّاحِ وَأَصْحَابُهُ، فَأَخْبَرُوْهُ أَنَّ الْوَبَاءَ قَدْ وَقَعَ بِأَرْضِ الشَّأْمِ. قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ: فَقَالَ عُمَرُ: ادْعُ لِي الْـمُهَاجِرِيْنَ الْأَوَّلِيْنَ، فَدَعَاهُمْ فَاسْتَشَارَهُمْ، وَأَخْبَرَهُمْ أَنَّ الْوَبَاءَ قَدْ وَقَعَ بِالشَّأْمِ، فَاخْتَلَفُوْا، فَقَالَ بَعْضُهُمْ: قَدْ خَرَجْتَ لِأَمْرٍ، وَلاَ نَرَىٰ أَنْ تَرْجِعَ عَنْهُ، وَقَالَ بَعْضُهُمْ: مَعَكَ بَقِيَّةُ النَّاسِ وَأَصْحَابُ رَسُوْلِ اللهِ ﷺ، وَلَا نَرَىٰ أَنْ تُقْدِمَهُمْ عَلَىٰ هَذَا الوَْبَاءِ، فَقَالَ: ارْتَفِعُوْا عَنِّيْ، ثُمَّ قَالَ: ادْعُوْا لِي الْأَنْصَارَ، فَدَعَوْتُهُمْ فَاسْتَشَارَهُمْ، فَسَلَكُوْا سَبِيْلَ الْـمُهَاجِرِيْنَ، وَاخْتَلَفُوا كَاخْتِلَافِهِمْ، فَقَالَ: ارْتَفِعُوْا عَنِّيْ، ثُمَّ قَالَ: ادْعُ لِيْ مَنْ كَانَ هَا هُنَا مِنْ مَشْيَخَةِ قُرَيْشٍ مِّنْ مُّهَاجِرَةِ الْفَتْحِ، فَدَعَوْتُهُمْ، فَلَمْ يَخْتَلِفْ مِنْهُمْ عَلَيْهِ رَجُلَانِ، فَقَالُوْا: نَرَىٰ أَنْ تَرْجِعَ بِالنَّاسِ وَلَا تُقْدِمَهُمْ عَلَىٰ هَذَا الْوَبَاءِ، فَنَادَىٰ عُمَرُ فِي النَّاسِ: إِنِّيْ مُصَبِّحٌ عَلَىٰ ظَهْرٍ فَأَصْبِحُوْا عَلَيْهِ. قَالَ أَبُوْ عُبَيْدَةَ بْنُ الْـجَرَّاحِ: أَفِرَارًا مِّنْ قَدَرِ اللهِ؟ فَقَالَ عُمَرُ: لَوْ غَيْرُكَ قَالَـهَا يَا أَبَا عُبَيْدَةَ؟ نَعَمْ نَفِرُّ مِنْ قَدَرِ اللهِ إِلَىٰ قَدَرِ اللهِ، أَرَأَيْتَ لَوْ كَانَ لَكَ إِبِلٌ هَبَطَتْ وَادِيًا لَهُ عُدْوَتَانِ، إِحْدَاهُمَا خَصِبَةٌ، وَالْأُخْرَىٰ جَدْبَةٌ، أَلَيْسَ إِنْ رَعَيْتَ الْـخَصْبَةَ رَعَيْتَهَا بِقَدَرِ اللهِ، وَإِنْ رَعَيْتَ الْـجَدْبَةَ رَعَيْتَهَا بِقَدَرِ اللهِ؟ قَالَ: فَجَاءَ عَبْدُ الرَّحْمٰنِ بْنُ عَوْفٍ – وَكَانَ مُتَغَيِّبًا فِيْ بَعْضِ حَاجَتِهِ – فَقَالَ: إِنَّ عِنْدِيْ فِيْ هَذَا عِلْمًا، سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ يَقُولُ: «إِذَا سَمِعْتُمْ بِهِ بِأَرْضٍ فَلاَ تَقْدَمُوْا عَلَيْهِ، وَإِذَا وَقَعَ بِأَرْضٍ وَأَنْتُمْ بِهَا فَلَا تَخْرُجُوْا فِرَارًا مِنْهُ».
‘হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাযি.) থেকে বর্ণিত, আমীরুল মুমিনীন হযরত ওমর (রাযি.)-এর শাসনামলে সাহাবীদের সময়ে একবার মহামারী প্লেগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। সিরিয়ায়-প্যালেস্টাইনে এ প্লেগে আক্রান্ত হয়ে শাহাদাতবরণ করেন অনেক সাহাবী। তাঁদের মধ্যে একজন ছিলেন জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত সাহাবী। হযরত ওমর (রাযি.) সিরিয়ার উদ্দেশ্যে ৬৩৯ খ্রিস্টাব্দে রওয়ানা হয়েছিলেন। ‘সারগ’ নামক জায়গায় পৌঁছার পর সেনাপতি হযরত আবু উবাইদা (রাযি.) খলীফাকে জানালেন, সিরিয়ায় তো প্লেগ দেখা দিয়েছে। হযরত ওমর (রাযি.) প্রবীণ সাহাবীদেরকে পরামর্শের জন্য ডাকলেন। জানতে চেয়েছেন, এখন কী করবো? সিরিয়ায় যাবো নাকি যাবো না? সাহাবীদের মধ্য থেকে দুটো মত আসলো। একদল বললেন, ‘আপনি যে উদ্দেশ্যে বের হয়েছেন সে উদ্দেশ্যে যান।’ আরেক দল বললেন, ‘আপনার না যাওয়া উচিত।’ তারপর আনসার ও মুহাজিরদের ডাকলেন পরামর্শ দেওয়ার জন্য। তারাও মতপার্থক্য করলেন। সর্বশেষে বয়স্ক কুরাইশদের ডাকলেন। তাঁরা এবার মতানৈক্য করলেন না। সবাই মত দিলেন, ‘আপনার প্রত্যাবর্তন করা উচিত। আপনার সঙ্গীদের প্লেগের দিকে ঠেলে দেবেন না।’ হযরত ওমর (রাযি.) তাঁদের মত গ্রহণ করলেন। তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন, মদীনায় ফিরে যাবেন। খলীফাকে মদীনায় ফিরে যেতে দেখে সেনাপতি হযরত আবু উবাইদা (রাযি.) বললেন, ‘আপনি কি মহান আল্লাহর নির্ধারিত ইচ্ছে থেকে পালানোর জন্য ফিরে যাচ্ছেন?’ আবু উবাইদাহ (রাযি.)-এর কথা শুনে হযরত ওমর (রাযি.) কষ্ট পেলেন। হযরদ আবু উবাইদা (রাযি.) ছিলেন তাঁর এতো পছন্দের যে, হযরত আবু উবাইদা (রাযি.) এমন কথা বলতে পারেন হযরত ওমর (রাযি.) সেটা ভাবেননি। হযরত ওমর (রাযি.) বললেন, ‘ওহে আবু উবাইদা! যদি তুমি ব্যতীত অন্য কেউ কথাটি বলতো! আর হ্যাঁ, আমরা আল্লাহর এক তাকদীর থেকে আরেক তাকদীরের দিকে ফিরে যাচ্ছি।’ আল্লাহর এক তাকদীর থেকে আরেক তাকদীরের দিকে ফিরে যাওয়ার মানে কী? হযরত ওমর (রাযি.) সেটা হযরত আবু উবাইদা (রাযি.)-কে বুঝিয়ে বলেন, ‘তুমি বল তো, তোমার কিছু উটকে তুমি এমন কোনো উপত্যকায় নিয়ে গেলে যেখানে দুটো মাঠ আছে। মাঠদুটোর মধ্যে একটি মাঠ সবুজ শ্যামল, আরেক মাঠ শুষ্ক ও ধূসর। এবার বলো, ব্যাপারটি কি এমন নয় যে, তুমি সবুজ মাঠে উট চরাও তাহলে তা আল্লাহর তাকদীর অনুযায়ী চরিয়েছো। আর যদি শুষ্ক মাঠে চরাও, তা-ও আল্লাহর তাকদীর অনুযায়ী চরিয়েছো।’ অর্থাৎ হযরত ওমর (রাযি.) বলতে চাচ্ছেন, হাতে সুযোগ থাকা সত্ত্বেও ভালোটা গ্রহণ করা মানে এই না যে আল্লাহর তাকদীর থেকে পালিয়ে যাওয়া। কিছুক্ষণ পর হযরত আবদুর রহমান ইবনে আউফ (রাযি.) আসলেন। তিনি এতক্ষণ অনুপস্থিত ছিলেন। তিনি এসে রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর একটি হাদীস শোনালেন। আর তা হচ্ছে, ‘তোমরা যখন কোনো এলাকায় প্লেগের বিস্তারের কথা শুনো তখন সেখানে প্রবেশ করো না। আর যদি কোনো এলাকায় এর প্রাদুর্ভাব নেমে আসে, আর তোমরা সেখানে থাকো, তাহলে সেখান থেকে বেরিয়ে যেও না।’’ (সহীহ আল-বুখারী: ৭/১৩০, হাদীস: ৫৭২৯)
রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর হাদীসটি সমস্যার সমাধান করে দিলো। হযরত ওমর (রাযি.) হাদীসটি শুনে মদীনায় প্রত্যাবর্তন করেন। মদীনায় ফিরে ওমর (রাযি.) হযরত আবু উবাইদা (রাযি.)-কে চিঠি লিখলেন, ‘আপনাকে আমার খুব প্রয়োজন। আমার এ চিঠিটি যদি রাতের বেলা আপনার কাছে পৌঁছে তাহলে সকাল হওয়ার পূর্বেই আপনি রওয়ানা দেবেন। আর চিঠিটি যদি সকাল বেলা পৌঁছে তাহলে সন্ধ্যা হওয়ার পূর্বের আপনি রওয়ানা দেবেন।’ চিঠিটা পড়ে হযরত আবু উবাইদা (রাযি.) বুঝতে পারলেন। খলীফা চাচ্ছেন তিনি যেন প্লেগে আক্রান্ত না হন। অথচ একই অভিযোগ তো তিনি হযরত ওমর (রাযি.)-কে করেছিলেন। প্রতিউত্তরে হযরত আবু উবাইদা (রাযি.) লিখেন, ‘আমিরুল মুমিনীন! আমি তো আপনার প্রয়োজনটা বুঝতে পেরেছি। আমি তো মুসলিম মুজাহিদদের মধ্যে অবস্থান করছি। তাদের মধ্যে যে মুসীবত আপতিত হয়েছে তা থেকে আমি নিজেকে বাঁচানোর প্রত্যাশী নই। আমি তাদেরকে ছেড়ে যেতে চাই না, যতোক্ষণ না আল্লাহ আমার ও তাদের মাঝে চূড়ান্ত ফয়সালা করে দেন। আমার চিঠিটি পাওয়ামাত্র আপনার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করুন এবং আমাকে এখানে অবস্থানের অনুমতি দিন।’ চিঠিটি পড়ে হযরত ওমর (রাযি.) ব্যাকুলভাবে কান্না করেন। তাঁর কান্না দেখে মুসলিমরা জিজ্ঞেস করলো, আমিরুল মুমিনীন! আবু উবাইদা কি ইন্তিকাল করেছেন? হযরত ওমর (রাযি.) বললেন, ‘না, তবে তিনি মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে।’ (আসহাবে রাসূলের জীবনকথা, আবদুল মা’বুদ, ১/৯৩-৯৪)
কিছুদিন পর হযরত আবু উবাইদা (রাযি.) প্লেগে আক্রান্ত হন। আক্রান্ত হওয়ার অল্পদিনের মধ্যেই শাহাদাতবরণ করেন। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন,
«الطَّاعُوْنُ شَهَادَةٌ لِّكُلِّ مُسْلِمٍ».
‘(প্লেগ) মহামারীতে মৃত্যু হওয়া প্রত্যেক মুসলিমের জন্য শাহাদাত।’ (সহীহ আল-বুখারী: ৪/২৪, হাদীস: ২৮৩০)
হযরত আবু উবাইদা (রাযি.) ছিলেন জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত সাহাবী। আশারায়ে মুবাশশারার একজন। রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর ইন্তিকালের পর খলীফা নির্বাচনের প্রসঙ্গ উঠলে হযরত আবু বকর (রাযি.) হযরত আবু উবাইদা (রাযি.)-কে প্রস্তাব করেন। হযরত ওমর (রাযি.) ইন্তিকালের আগে কে পরবর্তী খলীফা হবেন এ প্রশ্ন উঠলে তিনি বলেন, ‘যদি আবু উবাইদা বেঁচে থাকতেন তাহলে কোনো কিছু না ভেবে তাঁকেই খলীফা বানাতাম।’ রাসূলুল্লাহ (সা.) প্লেগ সম্পর্কে বলেন,
«أَنَّهُ عَذَابٌ يَبْعَثُهُ اللهُ عَلَىٰ مَنْ يَّشَاءُ، وَأَنَّ اللهَ جَعَلَهُ رَحْمَةً لِّلْمُؤْمِنِيْنَ، لَيْسَ مِنْ أَحَدٍ يَّقَعُ الطَّاعُوْنُ، فَيَمْكُثُ فِيْ بَلَدِهِ صَابِرًا مُّحْتَسِبًا، يَعْلَمُ أَنَّهُ لاَ يُصِيْبُهُ إِلَّا مَا كَتَبَ اللهُ لَهُ، إِلَّا كَانَ لَهُ مِثْلُ أَجْرِ شَهِيْدٍ».
‘এটা হচ্ছে একটা আযাব। আল্লাহ তাঁর বান্দাদের মধ্যে যাদের ওপর ইচ্ছা তাদের ওপর তা প্রেরণ করেন। তবে আল্লাহ মুমিনদের জন্য তা রহমতস্বরূপ করে দিয়েছেন। কোনো ব্যক্তি যদি প্লেগে আক্রান্ত জায়গায় সওয়াবের আশায় ধৈর্য ধরে অবস্থান করে এবং তার অন্তরে দৃঢ় বিশ্বাস থাকে যে, আল্লাহ তাকদীরে যা লিখে রেখেছেন তাই হবে, তাহলে সে একজন শহীদের সওয়াব পাবে।’ (সহীহ আল-বুখারী: ৪/১৭৫, হাদীস: ৩৪৭৪)
হযরত আবু উবাইদা (রাযি.)-এর ইন্তিকালের পর সেনাপতি হন রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর আরেক প্রিয় সাহাবী হযরত মুআয ইবনে জাবাল (রাযি.)। সবাই তখন প্লেগের আতঙ্কে ভীত-সন্ত্রন্ত। নতুন সেনাপতি হওয়ার পর হযরত মুআয (রাযি.) একটা ভাষণ দেন। ভাষণে তিনি বলেন, ‘এই প্লেগ আল্লাহর পক্ষ থেকে কোনো মুসীবত নয়, বরং তাঁর রহমত এবং নবীর দুআ। হে আল্লাহ! এই রহমত আমার ঘরেও পাঠাও এবং আমাকেও এর যথেষ্ট অংশ দান কর।’ (হায়াতুস সাহাবা: ২/৫৮২)
দুআ শেষে এসে দেখলেন তাঁর সবচেয়ে প্রিয়পুত্র হযরত আবদুর রহমান (রহ.) প্লেগাক্রান্ত হয়ে পড়েছেন। ছেলে বাবাকে সান্ত্বনা দিয়ে কুরআনের ভাষায় বলেন,
اَلْحَقُّ مِنْ رَّبِّكَ فَلَا تَكُوْنَنَّ مِنَ الْمُمْتَرِيْنَؒ۰۰۱۴۷
‘সত্য তোমার রবের পক্ষ থেকে। সুতরাং তুমি কখনো সন্দেহ পোষণকারীর অন্তর্ভুক্ত হয়ো না।’ (সুরা আল-বাকারা: ১৪৭)
পুত্রের সান্ত্বনার জবাব পিতাও দেন কুরআনের ভাষায়:
سَتَجِدُنِيْۤ اِنْ شَآءَ اللّٰهُ مِنَ الصّٰبِرِيْنَ۰۰۱۰۲
‘ইনশা আল্লাহ তুমি আমাকে ধৈর্যশীলদের মধ্যে পাবে।’ (সুরা আস-সাফফাত: ১০২)
কিছুদিনের মধ্যে তাঁর প্রিয়পুত্র প্লেগে আক্রান্ত হয়ে শহীদ হন, তাঁর দুই স্ত্রী শহীদ হন। অবশেষে তাঁর হাতের একটা আঙুলে ফোঁড়া বের হয়। এটা দেখে হযরত মুআয (রাযি.) প্রচণ্ড খুশি হন। অল্পদিনের মধ্যে তিনিও প্লেগে আক্রান্ত হয়ে শহীদ হন। (আসহাবে রাসূলের জীবনকথা, ৩/১৫১-১৫২)
করোনা ভাইরাস অনেক জায়গায় মহামারী আকার ধারণ করেছে। ১৫০টির বেশি দেশে করোনা ভাইরাসে এ যাবৎ আক্রান্ত ১ লাখ ৬০ হাজার মানুষ। মারা গেছে ৫ হাজার ৬ শতাধিক মানুষ। সারাবিশ্বে এখন আলোচিত বিষয় হলো করোনা ভাইরাস। চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা এর থেকে পরিত্রাণের উপায় খুঁজতে ব্যস্ত। বিভিন্ন দেশের বিমানবন্দর, স্টেশনগুলোতে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। প্রতিটি দেশই নিজের সীমান্ত সুরক্ষায় জোর দিচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর সংক্রমণ দীর্ঘায়িত হতে পারে। কা’বা ঘরের তাওয়াফ সাময়িক স্থগিত রাখা হয়েছে (এখন সীমিত পর্যায়ে তাওয়াফ হচ্ছে)। সবমিলিয়ে পুরো বিশ্ব একটা আতঙ্কের মধ্যে আছে। ঠিক এই মুহূর্তে প্রশ্ন উঠছে, করোনা ভাইরাস কি আল্লাহর পক্ষ থেকে কোনো আযাব? বিগত কয়েক মাসের চীন সরকারের মুসলিম-বিদ্বেষী মনোভাব এবং মুসলিমদের ওপর নির্যাতনের ফলে অনেকেই মনে করছেন, এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে আযাব। চীন সরকার উইঘুরের মুসলিমদের যেভাবে নির্যাতন করেছে, মুসলিম আইডেন্টিটির জন্য তাদেরকে যেভাবে হয়রানি করা হচ্ছে, চীন সরকারের এই অ্যাকশনের জন্য একটা রিঅ্যাকশনারি অবস্থান থেকে মুসলিমরা কেউ কেউ করোনা ভাইরাসকে আল্লাহর পক্ষ থেকে আজাব বলে অভিহিত করছেন।
রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর হাদীস থেকে দেখতে পাই, প্লেগকে তিনি বলেছেন আল্লাহর পক্ষ থেকে আযাব, আবার বলেছেন, এটা মুমিনদের জন্য শর্তসাপেক্ষে রহমত। একই মহামারী ভাইরাস কারো জন্য হতে পারে আযাব, আবার কারো জন্য হতে পারে রহমত। তাই বলে, একে ঢালাওভাবে আল্লাহর পক্ষ থেকে আযাব কিংবা ঢালাওভাবে আল্লাহর পক্ষ থেকে রহমত বলার কোনো সুযোগ নেই। মহামারী ভাইরাস যদি আল্লাহর পক্ষ থেকে আযাব হয়ে থাকে তাহলে জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত সাহাবী আল্লাহর আযাবে ইন্তিকাল করেছেন? সাহাবীদের বেলায় আল্লাহ সাধারণভাবে ঘোষণা করেছেন, ‘আল্লাহ তাঁদের প্রতি সন্তুষ্ট এবং তারাও আল্লাহর প্রতি।’ তাহলে হযরত সুহাইল ইবনে আমর (রাযি.), হযরত মুআয ইবনে জাবাল (রাযি.), হযরত ফযল ইবনে আব্বাস (রাযি.), হযরত ইয়াযীদ ইবনে আবু সুফিয়ান (রাযি.), হযরত আবু মালিক আল-আশআরী (রাযি.) প্রমুখ সাহাবীগণ আল্লাহর আযাবে নিপতিত হয়েছেন? উত্তর হচ্ছে, না। রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর হাদীস অনুযায়ী ওই মহামারীকে তাঁরা রহমত হিসেবে নিয়েছিলেন। মহামারীতে মৃত্যুবরণ করাকে তাঁরা শাহাদাত হিসেবে দেখেছেন। যার ফলে হযরত মুআয ইবনে জাবাল (রাযি.) সেই রহমত পাওয়ার জন্য দুআ পর্যন্ত করেন।
মহামারী থেকে বাঁচার জন্য আমরা প্রতি ওয়াক্ত নামায শেষে মহান আল্লাহর কাছে কায়মনোচিত্তে দুআ করবো,
«أَذْهِبِ البَاسَ رَبَّ النَّاسِ، اشْفِ وَأَنْتَ الشَّافِيْ، لَا شِفَاءَ إِلَّا شِفَاؤُكَ، شِفَاءً لَا يُغَادِرُ سَقَمًا».
‘হে মানুষের প্রতিপালক! তুমি রোগ দূর করে দাও এবং আরোগ্য দান করো, তুমিই তো আরোগ্যদানকারী। তোমার আরোগ্য ভিন্ন আর কোনো আরোগ্য নেই। এমন আরোগ্য দাও, যারপর কোনো রোগ থাকে না।’ (সহীহ আল-বুখারী, ৭/১২১, হাদীস: ৫৬৭৫)
আবার রাসূলুল্লাহ (স.) এই দুআটিও পড়তে বলেছেন,
«اللّٰهُمَّ إِنِّيْ أَعُوْذُ بِكَ مِنَ الْبَرَصِ، وَالْـجُنُوْنِ، وَالْـجُذَامِ، وَمِنْ سَيِّئِ الْأَسْقَامِ».
‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আওজুবিকা মিনাল বারাসি, ওয়াল জুনুনি, ওয়াল জুযামি, ওয়া সাইয়ি ইল আসক্কাম।’ (সুনানে আবু দাউদ, ৩/৯৩, হাদীস: ১৫৫৪)
একটি হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন,
«مَا مِنْ مُّسْلِمٍ تُصِيْبُهُ مُصِيْبَةٌ، فَيَقُوْلُ مَا أَمَرَهُ اللهُ: [اِنَّا لِلّٰهِ وَ اِنَّاۤ اِلَيْهِ رٰجِعُوْنَؕ۰۰۱۵۶] {البقرة: 156}، اللّٰهُمَّ أْجُرْنِيْ فِيْ مُصِيْبَتِيْ، وَأَخْلِفْ لِيْ خَيْرًا مِّنْهَا، إِلَّا أَخْلَفَ اللهُ لَهُ خَيْرًا مِّنْهَا».
‘যে কেউ বিপদ- মুসিবতে পড়ে ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন’ বলবে এবং বলবে, হে আল্লাহ! আমাকে এ মুসীবত থেকে উদ্ধার করুন এবং এর থেকে উত্তম বস্তু ফিরিয়ে দিন, অবশ্যই আল্লাহ তাকে উত্তম কিছু ফিরিয়ে দেবেন।’ (মুসলিম: ২/৬৩১, হাদীস: ৯১৮)
করোনা ভাইরাস থেকে বেঁচে থাকতে ডাক্তাররা সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায় থাকতে বলেছেন। আর রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন,
«الطُّهُوْرُ شَطْرُ الْإِيْمَانِ».
‘পবিত্রতা ঈমানের অঙ্গ।’ (সহীহ মুসলিম: ১/২০৩, হাদীস: ২২৩)
আমাদের সবার উচিত রাসূলুল্লাহ (সা.) কর্তৃক প্রবর্তিত সমাধান মেনে চলা এবং আল্লাহর কাছে নিজ নিজ গোনাহের জন্য তওবা করা। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী চলা। রাসূলুল্লাহ (সা.) প্লেগের ব্যাপারে প্রথমে সতর্ক করেন, ‘যেসব জায়গায় প্লেগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে সেসব জায়গায় যাবে না।’ তারপর বলেছেন, ‘যেখানে আছো সেখানে প্লেগ দেখা দিলে অন্যত্র যাবে না।’ রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর হাদীস ও হযরত ওমর (রাযি.)-এর আমল থেকে দেখতে পাই, মহামারীর বেলায় প্রতিরক্ষার দিকে সতর্ক হওয়ার শিক্ষা। আবার অন্যন্য সাহাবীরা যখন প্লেগে আক্রান্ত হয়েছেন, তখন ধৈর্যধারণ করে, রহমত মনে করে আল্লাহর ফয়সালাকে মেনে নিয়েছেন। যার প্রতিদানস্বরূপ রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর হাদীস অনুযায়ী তাঁদের মৃত্যু হচ্ছে, শাহাদাতবরণ। তারপরও যদি করোনা-আক্রান্ত হয়ে আমরা অসুস্থ হয়ে পড়ি, তাহলে ধৈর্য ধারণ করবো, আল্লাহর ফয়সালায় সন্তুষ্ট থাকবো এবং শাহাদাতের পেয়ালাপানে উন্মুখ থাকবো। ভালো-মন্দ যা কিছু ঘটুক, মেনে নেবো সন্তুষ্টচিত্তে, এটিই প্রকৃত ঈমানদারের পরিচয়।
লেখক: পিএইচডি গবেষক, ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ স্টাডিজ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়