পবিত্র হজব্রত পালন শেষে জামিয়া প্রধানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে বিশেষ সংবর্ধনা অনুষ্ঠান সম্পন্ন
২৬ আগস্ট’১৯ (সোমবার) বাদে ইশা জামিয়ার দারুল হাদিস মিলনায়তনে জামিয়ার সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংগঠন দায়িরাতুল আদব আল-ইসলমিয়ার ব্যবস্থাপনায় বিশেষ সংবর্ধনা অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়। জামিয়ার প্রধান পরিচালক ও শাইখুল হাদিস আল্লামা আবদুল হালীম বুখারী (দা. বা.) পবিত্র হজব্রত পালন শেষে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে এ বিশেষ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন জামিয়ার সিনিয়র শিক্ষক প্রখ্যাত আরবি সাহিত্যিক ও বিশিষ্ট কবি আল্লামা আবদুল জলিল কওকব (দা. বা.)। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথিকে বিভিন্ন প্রকার আরবি ও উর্দু কবিতা আবৃত্তি করে বিশেষ সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
প্রধান অতিথির গুরুত্বপূর্ণ ভাষণে আল্লামা বুখারী (দা. বা.) বলেন, যেসব কবিতা অনুষ্ঠানে পেশ করা হয়েছে এর জন্য আমি অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। কবিতার মাধ্যমে বিভিন্ন ভাষায় দক্ষতা অর্জন করা আমাদের মূল লক্ষ্য। এই কবিতাগুলোতে যে প্রশংসা করা হয়েছে আমি এর উপযুক্ত নই। তবে যে দুআগুলো করা হয়েছে এগুলো আমার জন্য অনেক কল্যাণকর হবে। হুযুর আরো বলেন, পবিত্র মক্কা ও মদীনার যিয়ারত আল্লাহ তাওফিক দিলেই হয়। আমাদের জামিয়ার সাবেক সফল মুহতামিম শাইখুল আরব ওয়াল আযম হাজী ইউনুছ (রহ.) প্রায় ৫০ বার হজ করেছেন। হুযুর সকলকে তার মক্কা মদীনার স্মৃতিবিজড়িত সফরনামা শুনান, এতে সকলে আবেগ আপ্লুত হয়ে যায়। শেষে হুযুরের দোয়া ও মুনাজাতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।
ভারতের তাবলীগ জামায়াতের শীর্ষস্থানীয় ৬জন আলেমে দীনের জামিয়া পরিদর্শন
১২ সেপ্টেম্বরÕ19 (বৃহস্পতিবার) দারুল উলুম দেওবন্দের ফাজেল, ভারতের তাবলীগ জামায়াতের শীর্ষস্থানীয় ৬জন আলেমে দীন জামিয়া পরিদর্শন করেন। বাদে ফজর মেহমানগণের সম্মানার্থে জামিয়ার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে তালিবে ইলমদের উদ্দেশ্যে মেহমান দিক-নির্দেশনামূলক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নসিহত পেশ করেন। ছাত্রদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, সমগ্র মুসলিম জাতি আপনাদের দিকে অধীর আগ্রহে তাকিয়ে আছে। আপনারা ভালোভাবে লেখা-পড়া করে মানুষের মতো মানুষ হয়ে এই জাতির মাঝে ঈমান ও আমলের বিপ্লব ঘটাবেন। সেজন্য আপনাদেরকে এখান থেকে মজবুত ইলম নিয়ে বের হতে হবে। যাতে উম্মতের সামনে যে কথাই পেশ করা হোকনা কেন দৃড়তার সাথে পেশ করা যায় এবং একথাগুলো দ্বারা উম্মতের পরিপূর্ণ ফায়দা হয়। মেহমান আরও বলেন, সাধারণ মুসলমানদের মাঝে ইমান-আমলের মেহনত করা ওলামায়ে কেরামের অপরিহার্য দায়িত্ব ও কর্তব্য। এই দায়িত্ব পালন করতে হবে উম্মতের ওপর দায়বদ্ধতা থেকে। যদি ওলামায়ে কেরাম এ মোবারক জিম্মাদারি থেকে হাত গুটিয়ে নেয়। তাহলে দীনের পতন শুরু হয়ে যাবে। অবশেষে ছাত্রদের প্রথম সাময়িক পরীক্ষার পর ৩দিন রামাযানের ছুটিতে এক সিল্লা ও লেখা-পড়া সমাপ্ত হওয়ার পর এক সাল এর জন্য তাশকিল করেন। মেহমানবৃন্দ তাবলীগ জামায়াতের সাথে জামিয়ার ছাত্র শিক্ষকদের গভীর সম্পৃক্ততা এবং কাজের উন্নতি দেখে অত্যন্ত খুশি হয়েছেন। অনুষ্ঠনের শেষলগ্নে প্রাণখুলে সকলের জন্য দুআ করেন।
গাইরে মুকাল্লিদবিষয়ক বির্তক অনুষ্ঠিত
১১ সেপ্টেম্বর’19 (বুধবার) বাদে মাগরিব হতে জামিয়ার দারুল হাদিস মিলনায়তনে শুবায়ে মুনাযারার ব্যবস্থাপনায় গাইরে মুকাল্লিদ বিষয়ক একটি বির্তক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন, জামিয়ার সিনিয়র মুহাদ্দিস, তাফসীর ও মুনাযারা বিভাগীয় প্রধান আল্লামা রফিক আহমদ (দা. বা.)। প্রধান বিচারক ছিলেন, জামিয়ার সিনিয়র শিক্ষক আল্লামা কাজী আখতার হুসাইন আনোয়ারী (দা. বা.)। বিতর্ক অনুষ্ঠানে ছাত্রবৃন্দ উল্লিখিত বিষয়টির পক্ষে-বিপক্ষে অত্যন্ত দক্ষতার সাথে যুক্তি ও দলিল উপস্থাপন করেন। বিষয়টি যুগোপযোগী ও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় বিপুল পরিমাণে উপস্থিতি পরিলক্ষিত হয়। অনুষ্ঠানের শেষলগ্নে শ্রোতাদের উদ্দেশ্যে প্রদত্ত বয়ানে প্রধান বিচারক বলেন, আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের অন্যতম বৈশিষ্ঠ্য হচ্ছে, বায়নাল ইফরাত ওয়াত তাফরীত অর্থাৎ মধ্যপন্থা অবলম্বন| এদেশের তথাকথিত লা-মাযহাবী, গাইরে মুকাল্লিদরা জঘন্যতম কর্মকাণ্ড করে বেড়াচ্ছে। এ লা-মাযহাবীরা সমাজের মধ্যে ফিতনা ছড়াচ্ছে। এদের সকল প্রকার চ্যালেঞ্জের মোকাবেলায় নিজেকে যোগ্য আলেমে দীন হিসেবে গড়ে তুলতে এসব বির্তক অনুষ্ঠানের কোন বিকল্প নেই। পরিশেষে হুযুর উপস্থিত সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন ও মুবারকবাদ জানিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
প্রথম সাময়িক পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা
১৫ সেপ্টেম্বর (রবিবার) জামিয়ার সহকারি পরিচালক আল্লামা আবু তাহের নদভী (দা. বা.) ১৪৪০, ৪১ হিজরী শিক্ষাবর্ষের প্রথম সাময়িক পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করেছেন। হুযুর বলেন, মাদরাসার সাধারণ নিয়ম অনুযায়ী সফর মাসের প্রথম সপ্তাহে ৫ তারিখ শনিবার হতে প্রথম সাময়িক পরীক্ষা আরম্ভ হবে ইন শা আল্লাহ। †m হিসেবে কালক্ষেপণ না করে সময়কে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে লেখা-পড়ায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী সকল বিষয় পরিবহার করে লেখা-পড়া প্রতি মনোনিবেশ করতে জোর তাগিদ দিয়েছেন। যারা এই পরীক্ষায় অকৃতকার্য হবে তাদের ব্যাপারে মাদরাসার কানুন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও হুশিয়ারি বাণী উচ্চারণ করেন।
তথ্যসূত্র: আবদুর রহমান বিন ইউনুছ
জামিয়া প্রতিবেদক, মাসিক আত-তাওহীদ