ভোরের আজান
কাজী হায়াত মাহমুদ
ভোরের আজান শুনে খোল গৃহ-দোর,
মসজিদে গিয়ে কর আল্লাহর শোকর।
এতক্ষণ ছিলে ঘুমে কেঁটে গেছে রাত,
চেয়ে দেখ চারদিকে আলোর প্রভাত।
রাতদিন আলো-আঁধার যাঁর হুকুমে হয়,
ভেবে বুঝ সেই তিনি কত দয়াময়।
নামাযের কাজ শেষে সংসারের কাজে,
নেমে পড় মাঠে-ঘাটে, মনোযোগী সেজে।
জগত কাজেরই মাঠ যার যেটা কাজ,
কাল নয় যথাযথ কর তাহা আজ।
দিনের শুরুতে তুমি কর এই পণ,
হবে নাকো আমি কারো ক্ষতির কারণ।
মৃত্যু কার কতদূর মৃত্যুর শমন,
পৌঁছতে যাবে তাহা যখন-তখন।
সৎ পথে ভালো কাজে না করিও দেরি,
কিছু খেয়ে কিছু নিয়ে যেতে হবে বাড়ি।
কবরের যাত্রী
মুহাম্মদ আবদুল্লাহ
না ফেরারই পথিক হলেন
সঠিক পথে ছিলেন যারা।
ইহকালে রেখে গেলেন
অসংখ্যময় পুষ্প তারা।
নক্ষত্র যে ছিলেন তারা
অতুল কৃতি তাদের।
হৃদয় কোণে দেয় যে উঁকি
দীনের কর্ম যাদের।
করতেন তারা সমাজ শোধন
তাদের ছিলো এই দীনী কাজ।
আপন জীবন অর্পণ করে
নির্মূল করতো কালো সমাজ।
তাদের কোমল ব্যবহারে
মুগ্ধ হলেন তাদের প্রেমে।
স্রষ্টার এ আমন্ত্রণে
যুক্ত ছিলেন একই ফ্রেমে।
একটা ছেলে
মাহমুদুল হাসান নিজামী
দুষ্টু ভারি একটা ছেলে
সারাক্ষনই শুধু খেলে
মন দেয় না পড়ায়,
বছর শেষে অবশেষে
পরীক্ষাতে যায়রে ফেঁসে
ফলাফলে আন্ডা পায়।
সেই ছেলেটা ফাইনালেতে
পাস করে কোনামতে
পায়রে থার্ড ক্লাশ,
চাকরি পায় না কোনোখানে
ঘৃণায় পড়ে সবখানে
জীবনটা তার সর্বনাশ।
পড়ার সময় পড়তে হয়
খেলার সময় খেলা
নয়তো ভাই জীবনটাতে
বিপদ আছে মেলা।
পিতা-মাতার সেবা
হাবিবা আক্তার
পিতা-মাতার সাথে করো উত্তম ব্যবহার,
তার প্রতিদান সবাই পাবে চমৎকার।
পিতা-মাতা যাকেই কাছে পাও,
তাদের সেবা করে জান্নাত কিনে লও।
পিতা-মাতা যদি বৃদ্ধ হয়ে যান,
খারাপ ব্যবহার করবে নাকো
থাকতে দেহে প্রাণ।
মন দিয়ে ভালোভাবে করবে তাদের সেবা,
পিতা মাতা ছাড়া পৃথিবীতে আপন আছে কেবা।
হাত তুলিয়া পিতা মাতা করলে মুনাজাত,
চিরদিনের জন্য আল্লাহ দেবেন নাজাত।
দুই হৃদয়ের আঁকুতি
মুহাম্মদ ইবরাহীম মুরাদাবাদী
একটি পাখি বদ্ধ-কাঁচায় কষ্টে ভীষণ কাঁদে,
না চাহিতে পড়লো সে যে পাথর-দিলের ফাঁদে।
তার হৃদয়ে ইচ্ছে প্রবল মুক্তি কভু পেলে,
সবুজ বনে, মুক্ত মনে উড়বে পাখা মেলে।
দেখে যখন পাখপাখালি নীলাম্বরে ভাসে,
ভগ্নহৃদয় প্লাবিত হয় স্বাধীনতার আশে।
একটি শিশু ঘরহারা হায়! ফুটপাতে সে থাকে,
বুকের ভেতর কষ্ট হাজার পাথর চেপে রাখে।
বর্ষা-গরম, শীতকালেও নেই চোখে ঘুম রাতে,
অন্য শিশু অট্টালিকায় মাতা-পিতার সাথে।
তারও হৃদে ইচ্ছে সদা থাকবে ঘরে সুখে,
ভালবাসার হাত বাড়ালে ফুটবে হাসি মুখে।
পাখি-শিশু দুইয়ের প্রতি একটু দয়া করে,
বদ্ধ কাঁচার দার খুলে দাও, নাও শিশুকে ঘরে।